১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে দেশটি থেকে আসছে ৫০ হাজার মেট্রিক টান চাল। করাচির কাসিম বন্দর থেকে চালের প্রথম চালানটি বাংলাদেশে পাঠাতে প্রস্তুতি চলছে।
তবে বার্তাসংস্থা রয়টার্স সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে, পাকিস্তানের কাছ থেকে ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি দামে চাল কিনছে বাংলাদেশ। রয়টার্স বলেছে, ভিয়েতনাম থেকে প্রতি টন ৪৭৪ দশমিক ২৫ ডলার দরে, এক লাখ টন চাল কিনেছে বাংলাদেশ। সে হিসেবে এক কেজি চালের দাম পড়েছে ৫৭ টাকার একটু বেশি।
অপরদিকে পাকিস্তান থেকে প্রতি টন (১ হাজার কেজি) চাল কেনা হচ্ছে ৪৯৯ ডলারে। দেখা যাচ্ছে, ইসলামাবাদ থেকে প্রতি কেজি চাল কিনতে বাংলাদেশের লাগছে প্রায় ৬১ টাকা।
পাকিস্তান থেকে কেনা ৫০ হাজার টনের অর্ধেক চাল আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আসবে। আর বাকি ২৫ হাজার টন আসবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে। গত মাসে এই চাল কেনার চুক্তি হয়। সরকার-সরকার চুক্তির আওতায় এসব চাল সরবরাহ করবে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশন।
এদিকে দেশে মধ্যমানের চালের দাম প্রতি কেজি ৮০ টাকাতে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতে বাজার স্থিতিশীল করতে চাল আমদানিতে নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চালের ওপর থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে আমদানি শুল্কও।
ভিয়েতনাম থেকে যেসব চাল আনা হবে সেগুলো বাংলাদেশ সরকার ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) আওতায় বিক্রি করবে। সেখানে প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হবে ৩০ টাকা। সবমিলিয়ে দেশের ৯০৬টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ৯০৭ টন চাল বিক্রি করা হবে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী ৫০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি টন ৪৯৯ মার্কিন ডলার হিসাবে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চালের আমদানিমূল্য ২ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০৪ কোটি টাকার মতো।
ভারত থেকেও ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন হয়। তবে ভারত থেকে সেই চাল আসছে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে কাজ পেয়েছে গুরুদিও এক্সপোর্টস কর্পোরেশন। ভারতীয় চাল টনপ্রতি দাম পড়ছে ৪৫৪.১৪ মার্কিন ডলার। তাতে ৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ২৭৭ কোটি টাকা।
এদিকে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী দেশ। তা সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণ চাল অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়। ২০২৩ সালেও বাংলাদেশ দুই লাখ টন চাল আমদানি করেছিল। সেগুলো আনা হয়েছিল ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমার থেকে। এবারও এসব দেশ থেকে চাল আসছে। তবে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাকিস্তান।
সূত্র: রয়টার্স
এ ইউ/
Discussion about this post