টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভোর থেকে এ যানজট শুরু হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কের উপজেলার নবগ্রাম রাস্তার মাথা থেকে চৌদ্দগ্রাম বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। সড়ক ডুবে যাওয়ায় যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। ফলে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।
পরিবহন চালক জহির আলী জানান, কালির বাজারের পর থেকে সড়কে হাঁটুপানি। ফলে গাড়ি চালানো অনেক কষ্টকর। ধীরগতি হওয়ায় সড়কে যানজট লেগেছে। সোলাইমান নামের এক গাড়ি চালক বলেন, মাহাসড়কে হাঁটুপানি আমার বয়সে কখনো দেখিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ওসি এস এম লোকমান হোসাইন বলেন, মহাসড়কে পানির কারণে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ক্রমেই ফুঁসে উঠেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। ইতোমধ্যে প্রায় চার হাজার হেক্টর এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।বৃষ্টি ও ঢলের পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। দ্রুতই দুকূল ছাপিয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডাকাতিয়া ও কাঁকড়ী নদীর পানি বেড়ে গিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট উপজেলাসহ অধিকাংশ এলাকার ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি, পশুপাখির খামার ভেসে যাওয়াসহ, চলাচল ব্যবস্থা চরমভাবে বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদনদীর পানি হঠাৎ যেন ফুঁসে উঠেছে। এসব নদীর পানিতে ১০ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, নোয়াখালীর আট উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা, রাঙামাটির সাজেক, কুমিল্লা, ফেনী, মৌলভীবাজারের দুটি উপজেলা, চট্টগ্রামের মিরসরাই, চাঁদপুর, সিলেট ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সাজেকে দুই শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। ফেনীতে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চেয়েছে জেলা প্রশাসন। সিলেটে পানি বাড়ছে। অন্যদিকে, খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ১৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিন দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এন পি/
Discussion about this post