অনেকের ক্ষেত্রেই লক্ষ করা যায় ব্রণ, মেছতা—এগুলো শুধু মেয়েদের সমস্যা ভেবে বসে আছে। প্রকৃতপক্ষে তা নয়। মেছতা বা মেলাজমা পুরুষেরও হতে পারে; যদিও এটি মূলত নারীর সমস্যা। সাধারণত হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতায়, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করলে মেছতা বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু আমেরিকান কলেজ অব ডার্মাটোলজি বলছে, ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষেরও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এশিয়ার বাদামি রঙের ত্বকবিশিষ্ট মানুষের মেছতা বেশি হয়ে থাকে।
নারীর মতো পুরুষের ক্ষেত্রেও হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা মেছতার অন্যতম কারণ। ইস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এর জন্য দায়ী হতে পারে।
মেছতা কী, কেমন
মেছতা হলো মুখের ত্বকের ওপর কালচে বা গাঢ় বাদামি দাগ। চিবুক, কপাল, নাক বা ঠোঁটের ওপর দেখা দিতে পারে এ দাগ। সাধারণত মুখমণ্ডলের দুই দিকেই হয় মেছতা।
পুরুষের কেন হয়
নারীর মতো পুরুষের ক্ষেত্রেও হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা মেছতার অন্যতম কারণ। ইস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এর জন্য দায়ী হতে পারে।
হরমোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হতে পারে মেছতা, যেমন ফিনেসটেরাইডের প্রভাব।
কিছু প্রসাধনসামগ্রী দায়ী হতে পারে। পুরুষের সুগন্ধিতে অনেক সময় ফিনেসটেরাইড থাকে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, শর্ষের তেল মুখে মালিশ করলে মেছতা হতে পারে। কারণ, শর্ষের তেল ফটোসেনসিটিভ বা আলোকসংবেদনশীল এবং এটি সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলে ত্বকের রং গাঢ় করতে পারে।
যদিও পুরুষের থাইরয়েডের সমস্যা কম হয়, তবু থাইরয়েডজনিত রোগে ত্বকে মেছতা হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব মেছতার প্রবণতা বাড়ায়। পুরুষেরা বাইরে কাজ করেন বেশি এবং তাঁদের মধ্যে সাধারণত সানস্ক্রিন ব্যবহার করার প্রবণতা কম। তাই যাঁরা রোদে কাজ করেন, তাঁদের এটি হতে পারে।
চিকিৎসা
প্রথমত, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে দূরে থাকতে হবে।
জিংক অক্সাইড ও টাইটানিয়াম অক্সাইডযুক্ত ১৫ এসপিএফসম্পন্ন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
নানা রকম ক্রিমসহ কেমিক্যাল পিল, লেজার বা ডার্মাব্রেশন পদ্ধতি অবলম্বন করেও চিকিৎসা করা যায়।
অধ্যাপক মো. আসিফুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ
এস আই/
Discussion about this post