একদল পুলিশের সামনে নিরস্ত্র দুজন তরুণ। বন্দুক তাক করে একজন গুলি ছুড়ছে। আর সামনে গুলিবিদ্ধ একজনকে টেনে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন যুবক। শেষ পর্যন্ত না পেরে ওই যুবক দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। আহত পড়ে থাকে অপরজন।
জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলির এই ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে ঘটনাটি ছিল ২০ জুলাইয়ের। ভিডিওটিতে যে ছেলেটি পড়ে ছিল সেদিনই তার মৃত্যু হয়। ছেলেটির নাম ইমাম হাসান ভুঁইয়া তাইম। সে ছিল নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর তার বাবা হলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা যার নাম ময়নাল হোসেন।
নিরস্ত্র ছাত্র ইমাম হাসানকে শুধু গুলি করেই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। তাকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেয়া হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেলে ছেলের মরদেহে গুলি দেখার পর মোবাইলে একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই পুলিশ সদস্যই জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘একজনকে মারতে কতগুলো গুলি লাগে স্যার’।
পুলিশের গুলির প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনার ভিডিও চিত্র থাকার কারণে যিনি গুলি করেছিলেন তাকে চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করেছে পরিবারটি। যাত্রাবাড়ী থানার আওতায় ঘটনা ঘটলেও আদালতের নির্দেশে ডেমরা থানায় এজাহারভুক্ত হয় তাদের মামলা। তবে এ মামলা থানায় এজাহারভুক্ত করতে দুইদিন সিএমএম আদালতে ঘুরেছেন ইমাম হাসানের স্বজনরা।
ইমাম হাসানের মা পারভীন আক্তারের অভিযোগ প্রথম দিন আদালতে শুনানির পর মামলাটি পিবিআইকে দিয়ে তদন্তের জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু পরদিন ছাত্র প্রতিনিধি এবং পরিবারের সদস্যরা আদালতে গিয়ে এক প্রকার অবস্থান নেয়ার পর মামলা ডেমরা থানায় এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। পরে থানায় গিয়ে মামলাটি এজাহারভুক্ত করতেও টালবাহানা করে পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে জানায় পরিবারটি।
পারভীন আক্তার প্রশ্ন রেখে বলেন, “আসামি ডিউটি করতাছে, টাকা নিতাছে ঘুমাইতেছে, একমাস হইয়া গেছে আর আমি ঘুমাইতে পারছি না। এইডা কেমন কথা। দেশের মধ্যে কী বিচার? আমি পুলিশের বউ হইয়াও বিচার পাচ্ছি না তাইলে সাধারণ মানুষ কি বিচার পাইবো?’সূত্র: বিবিসি বাংলা।
টিবি
Discussion about this post