অব্যাহত বর্বর হামলা ও দীর্ঘ অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট চলছে কয়েকমাস ধরে। শিশুরা ভুগছে অনাহার ও চরম অপুষ্টিতে। দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত ভয়াবহ হচ্ছে। জাতিসংঘের চোখে গাজা এখন ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা।’
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার (ওসিএইচএ) মুখপাত্র জেন্স লারকে এ কথা বলেছেন। তিনি জানান, গাজায় শতভাগ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে।
গার্ডিয়ান জানায়, জেন্স লারকে গাজায় ত্রাণ সংকটের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর অবরোধের কারণে ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পারছিল না। অবরোধ সামান্য তুলে দেওয়ায় ৯০০ ট্রাক অপেক্ষা করছে। যার মধ্যে ৬০০ ট্রাক সীমান্ত এলাকায় যেতে পেরেছে। খুব সামান্য পরিমান ত্রাণ ভেতরে প্রবেশ করতে পেরেছে। তিনি জানান, বিশ্বের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন বাধা পাওয়ার দৃষ্টান্ত নেই।
লারকে বলেন, ‘ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করা মাত্র মানুষ তা ঘিরে ধরছে ত্রাণের জন্য।’
জাতিসংঘ ও একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা যৌথভাবে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে সতর্ক করে জানায়, গাজায় চরম খাদ্য সংকট এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে গাজায় অনাহার, অপুষ্টি ও মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
এরইমধ্যে গত সপ্তাহে অনাহারে ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। যা এখন শতভাগে পৌঁছেছে।
এদিকে আল জাজিরা জানিয়েছে, জাতিসংঘ ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ইসরায়েল এখন পর্যন্ত অনুমতি দিচ্ছে না। জাতিসংঘের বিশেষ দূত মিশেল ফাখরি জানান, ইসরায়েল অবরোধে অটল।
ইসরায়েল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ দিয়েছে গাজায়। তবে জাতিসংঘ ওই সংস্থার তুমুল সমালোচনা করেছে। পুষ্টিহীন, স্বল্প পরিমাণে অব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে দেওয়া ওই ত্রাণে মানুষের কিছুই হয়নি। ফাখরির মতে, ওই ত্রাণে গাজার ক্ষুধার্ত মানুষকে অপমান করা হয়েছে। যা ক্ষুধা দমনে কিছুই করতে পারবে না।
গাজায় যুদ্ধবিরতি আনতে প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে এরইমধ্যে সম্মতি দিয়েছে ইসরায়েল। হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবটি তারা খতিয়ে দেখছে। এর আগে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার ও ত্রাণ সরবরাহ সহজ ও নিরাপদ করার দাবি জানিয়েছিল হামাস।
সূত্র : গার্ডিয়ান
এম এইচ/
Discussion about this post