বাংলাদেশের প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির জন্মদিন আজ (২৯ মে)। বেঁচে থাকলে আজকের এই দিনে ৭২ বছরে পা রাখতেন তিনি। একাধারে মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকহৃদয় ছুঁয়ে গেছেন এই অভিনেতা। অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা হয় তাকে।
অসাধারণ সৃষ্টিকর্মে সবার হৃদয়ে এখনও অমলিন হয়ে আছেন হুমায়ুন ফরীদি। শুরুতে মঞ্চ ও টিভি নাটকে অভিনয়ে করে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এই অভিনেতা; যা আজও দাগ কেটে আছে তার ভক্তদের মনে।
আশির দশকে নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় পা রাখেন হুমায়ুন ফরীদি। পরবর্তীতে বাংলা সিনেমার জগতে নিজেই এক অধ্যায় হয়ে ওঠেন তিনি। একে একে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।
‘মাতৃত্ব’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান হুমায়ুন ফরীদি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেন।
আরও পড়ুনঃ জুয়া কোম্পানির শুভেচ্ছা দূত হলেন মাহী
১৯৫২ সালের ২৯ মে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। তার বাবার নাম এ টি এম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
১৯৬৫ সালে পিতার চাকরির সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু হুমায়ুন ফরীদির। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ফরীদি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে জড়িয়ে পড়েন নাট্যাঙ্গনের সঙ্গে।
১৯৭৬ সালে নাট্যজন সেলিম আল দীনের উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় নাট্যোৎসব। আর হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন এর অন্যতম প্রধান সংগঠক। এই উৎসবে ফরীদির নিজের রচনায় এবং নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক। ওই সময় নাটকটি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান হুমায়ুন ফরীদি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬০। হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে ঢালিউড চলচ্চিত্রাঙ্গনে, সেটা অপূরণীয়।
হুমায়ুন ফরীদির অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘ভণ্ড’, ‘ঘাতক’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘টাকার অহংকার’, ‘অধিকার চাই’, ‘সন্ত্রাস’, ‘দহন’, ‘লড়াকু’, ‘দিনমজুর’, ‘বীর পুরুষ’, ‘বিশ্ব প্রেমিক’, ‘আজকের হিটলার’, ‘দুর্জয়’, ‘শাসন’সহ অসংখ্য সিনেমা উপহার দিয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে।
এছাড়া অভিনেতার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নিখোঁজ সংবাদ’, ‘হঠাৎ একদিন’, ‘পাথর সময়’, ‘সংশপ্তক’, ‘সমূদ্রে গাংচিল’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘নীল নকশাল সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’।
এ এ/
Discussion about this post