তাদের দেশ ভিন্ন। ভাষাও আলাদা। বড় হয়েছেন পৃথক সংস্কৃতিতে। এমন অনেক অমিল থাকা সত্ত্বেও এক হয়েছেন ভালোবাসার টানে। প্রথমে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম। শুধু তাই নয়, নিজের জন্মভূমি ছেড়ে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের নওগাঁয় এসে প্রেমিক জামিল হোসেনের (২৪) সঙ্গে তিন বছরের প্রেমের ইতি টেনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মালয়েশিয়ান তরুণী নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজাম (২৪)। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভিনদেশি নববধূকে দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার জামিল হোসেনের সঙ্গে একটি শপিংমলে বাজার করতে যাওয়ার সুবাদে তিন বছর আগে নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজামের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত (৩০ জুন) তারা বাংলাদেশে আসেন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে নিজ বাড়িতেই জাঁকজমকমভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে প্রেমিক জামিল হোসেনের গ্রামের বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়।
জামিল হোসেন বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের বিলাশবাড়ি গ্রামের কালাম হোসেনের ছেলে। তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী।
জামিল হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের শেষের দিকে মালয়েশিয়ায় যাই। যাওয়ার পর মালয়েশিয়ার জহুরবারু মোয়ার থানা এলাকায় একটি ফার্নিচার দোকানে কাজ করি। পাশেই একটি শপিংমল ছিল। সেখানে প্রায়ই কেনাকাটা করতে যেতাম। একপর্যায়ে নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজামের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই পরিচয় প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। পরে নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজাম তার পরিবারকে আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে জানান। প্রথমে নাজিয়ার বাবা-মা সম্পর্ক নিয়ে একটু মনঃক্ষুণ্ন ছিলেন। পরে পরিবারের সম্মতিতে মালয়েশিয়ায় আগেই নাজিয়ার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। এরপর গত ৩০ জুন বাংলাদেশে এসে আজ শুক্রবার ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক আমাদের আবার বিয়ে হয়। ছুটি শেষে আমরা আবারও মালয়েশিয়ায় ফিরে যাব।
তরুণী নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজাম বলেন, আমি জামিলকে অনেক বেশি ভালোবাসি। বাংলাদেশে এসে খুবই ভালো লাগছে। জামিলের পরিবারের সদস্যরা আমাকে মেয়ের মতো গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও এলাকার মানুষের সাথে খুব সহজেই মিশতে পেরে মনে হচ্ছে অনেক আগে থেকেই তাদের সাথে পরিচয় আছে।
জামিলের মা হালিমা খাতুন বলেন, উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ছেলের বউ খুব পছন্দ হয়েছে। বাড়িতে আসার পর থেকে সবার সাথে মিলেমিশে চলছে। বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছে। তাকে দেখতে বাড়িতে ছুটে আসছে মানুষ। বউ দেখে এলাকার মানুষও প্রশংসা করছে।
এদিকে আগে সোস্যাল মিডিয়া বা খবরে বিদেশি মেয়েরা বাঙালি ছেলের প্রেমের টানে চলে আসে- এমন খবর দেখলেও এখন তা নিজের চোখে দেখে অভিভূত স্থানীয়রা।
এম এইচ/
Discussion about this post