গেল কোরবানির ঈদের পর বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছিল দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন। মুক্তি পেয়েছিল শাকিব খানের ‘তুফান’সহ আরও বেশ কয়েকটি সিনেমা। এ সময়ের মধ্যে পরিবার-প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে কিংবা দল বেঁধে হলে গিয়ে সিনেমা দেখে বেশ আনন্দেই কাটাচ্ছিলেন তারা। ব্যাপারগুলো এতটাই জমে উঠেছিল যে, মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছিল দুষ্টু কোকিলের গুনগুন।
কিন্তু এত আমোদ-উন্মাদনার মাঝে হঠাৎই অস্থির হয়ে পড়ল পুরো দেশ। কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সহিংসতা পরিণত করল বিষাদে। বিভিন্ন বিধিনিষেধের সঙ্গে জারি করা হল কারফিউ। সবমিলিয়ে একটা স্থবিরতা তৈরি হয় সাধারণ দর্শকের মাঝে। তাইতো অন্য সবকিছুর মতই ছন্দপতন হয় দেশের প্রেক্ষাগৃহে।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সবকিছু ঠিক হলেই খুলে দেওয়া হবে প্রেক্ষাগৃহগুলো। তবে এভাবে হল বন্ধ থাকায় দেশের চলচ্চিত্রের বাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। হল মালিকরা বলছেন, সবকিছু ঠিক হলেও আগের মত সেই ধারাটা অর্থাৎ প্রেক্ষাগৃহে বিগত দিনগুলোর মত এত জন-জোয়ার দেখা যাবে না।
দেশের সবচেয়ে বড় মাল্টিপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার থেকেই দর্শক কম থাকায় হল থেকে সিনেমার শো গুলো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার কথায়, ‘কারফিউ জারি হলে আমরা নির্দেশনা মান্য করি। এখন আমরা সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি, হল খুলে দিতে বললেই আমরা খুলে দেব।’
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও পরবর্তীতে কতটা ক্ষতি পোষানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন মেসবাহ আহমেদ। বলেন, ‘ঈদের পরে যেভাবে ব্যবসা এগিয়ে যাচ্ছিল, তা আকস্মিকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। হল খুললেই যে আমরা স্বাভাবিক দর্শক পাব, এমন নাও হতে পারে।’
এছাড়াও দেশের একক প্রেক্ষাগৃহগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মধ্যে কাটাচ্ছেন হল মালিকরা। একরকম ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছেন তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যে ব্যবসা শুরু হবে, এমনটির আর সুযোগ নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ হল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বলের বক্তব্য, ‘যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত। হল খুললে ক্ষতি সামাল দিতে পারব কি না জানি না। দেশের পরিস্থিতি আগে স্বাভাবিক হোক তারপর বলা যাবে।’
এ এ/
Discussion about this post