বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ভারতে যান লাখ লাখ বাংলাদেশি। বিশেষ করে চিকিৎসা, পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য এমনকি শিক্ষার জন্যও প্রতিবেশি দেশটিতে বেশি পাড়ি জমান। এ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ বাংলাদেশির গন্তব্য থাকে ভারতে। তথ্য বলছে ২০২২ সালেই দেশটিতে গেছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক। তাই ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাতায়াতের নিয়ম আরও শিথিল করতে চায় বাংলাদেশ সরকার।
এ লক্ষ্যে সব দিক বিবেচনায় ভারতের সঙ্গে ভ্রমণ চুক্তিতে ব্যাপক সংশোধনী আনার প্রস্তাব করছে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তিতে গুরুত্বারোপ করা হবে দুই দেশের নাগরিকদের ভিসাসহ যাতায়াতের নানা সুযোগ-সুবিধা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণের সময় বাংলাদেশি বা ভারতীয়দের ভিসায় নির্দিষ্ট চেকপোস্টের কথা উল্লেখ থাকে। এতে অনেক সময় ভ্রমণকারীদের অসুবিধায় পড়তে হয়। এজন্য এবারের চুক্তিতে ভিসায় ‘ডেজিগনেটেড চেকপোস্ট’ তুলে দিয়ে ‘থ্রু এনি চেকপোস্ট’ কথাটি বসানোর প্রস্তাব করা হবে। এর ফলে ভিসা পাওয়ার পর ভ্রমণকারী তার সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো চেকপোস্ট বা রুট দিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রবেশ করতে ও ফিরে আসতে পারবেন।
একইভাবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সময় মেডিকেল ভিসার ক্ষেত্রে এক ভিসায় বারবার যাওয়া-আসার সুবিধা এবং হাসপাতাল পরিবর্তন করার সুবিধা রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া কূটনৈতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে বিনা ভিসায় অবস্থানের মেয়াদ ৪৫ দিনের পরিবর্তে ৯০ করার প্রস্তাব করবে বাংলাদেশ। এর বাইরেও স্বল্পমেয়াদি ডাবল এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ ৩ মাস থেকে বাড়িয়ে ৬ মাস করার প্রস্তাবও করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-ভারতের নাগরিকদের দুই দেশে যাতায়াতের জন্য ১৯৭২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে একটি ভ্রমণ চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় এক দেশ অপর দেশের নাগরিকদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসা দিয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে এই চুক্তি করা হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন ভ্রমণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রস্তাব চূড়ান্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় পক্ষের মতামতের জন্য পাঠানো হবে। উভয় পক্ষের মতামতের পরে চুক্তিটি নবায়ন করা হবে।
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এই লিংকে: https://www.youtube.com/watch?v=XaRSq0YYLZY
এ জেড কে/
Discussion about this post