সুনামগঞ্জের আশপাশের সব এলাকায় বানের পানিতে থৈ থৈ করছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যে সড়কগুলোতে অটোরিকশা, রিকশাসহ সব মোটরযান চলত, আজ সেখানে চলছে নৌকা। যাদের রাস্তায় দেখা যাচ্ছে, তারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে। নিম্নআয়ের মানুষ ও দিনমজুররা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে, আর যারা একটু স্বচ্ছল তারা উঠেছেন আবাসিক হোটেলে। কেউ কেউ আছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের বাসায়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার চারটি পৌরসভা এলাকাসহ ৭৮টি ইউনিয়নের ১ হাজার ১৮টি গ্রামের ছয় লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যা পরিস্থিতির শিকার।সুনামগঞ্জ জেলার পুরোটাই বন্যাকবলিত হলেও সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, মধ্যনগর ও ছাতক উপজেলার মানুষ। ছাতক উপজেলার পৌরসভাসহ সকল ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করার কারণে সুনামগঞ্জের অনেক হাওর এখন পানিতে টইটুম্বুর। আর এর ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে সুনামগঞ্জ সদর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম। ইতিমধ্যে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৭ হেক্টর জমির সবজিখেত পানিতে নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার কায়েতকান্দা, রাজধরপুর, কাকিয়াম মৌলভীপাড়া, আলমপুর দোয়াদুর রহমান ও দক্ষিণ রূপনগরের মোট পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।বন্যায় তলিয়ে আছে সকল উপজেলার স্থানীয় সড়ক। জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, মধ্যনগর এবং ছাতক উপজেলার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বুধবার (১৯ জুন) এর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দিরাইয়ে সুরমা নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী আছে।আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, রান্না করা খাবার বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এস এম/
Discussion about this post