কুমিল্লায় যৌথবাহিনী পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর হাসপাতালে তৌহিদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে তাকে আটকের পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তিনি মারা যান। তৌহিদুলের পরিবারের দাবি, নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নও ছিল।
নিহতের ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু সাংবাদিকদের জানান, আমার বাবা ৪ দিন আগে মারা গেছেন। শুক্রবার ছিল কুলখানি। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়িতে আসে। এ সময় পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে থাকা কয়েকজন তৌহিদুলের কাছে অস্ত্র আছে এমন অভিযোগে রুমে তল্লাশি করে। আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র নেই, বার বার তা বলার পরও তারা আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। শুক্রবার সকাল থেকে আমরা থানায় ভাইয়ের খোঁজ নিয়েও পাইনি।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ মোবাইল ফোনে আমাদের জানান, শহরতলীর গোমতী নদীর পাড়ের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়েছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। নির্যাতনে আমার ভাই নিহত হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, গোমতী পাড়ের ঝাকুনি পাড়ার গোমতী বিলাসে গিয়ে যখন তৌহিদকে গাড়িতে উঠাই তখনো তিনি বেঁচে ছিলেন। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে আমাদের (পুলিশ) কাছে হস্তান্তরের সময় অসুস্থ বোধ করায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ময়না তদন্তের পর সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। পরিবার থেকে এখনো লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে৷
এদিকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, যুবদল নেতা তৌহিদ তাদের দলের একজন সৎ ও নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার দুই মেয়ে কোরআনের হাফেজ। সে অস্ত্রধারী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।
এম এইচ/
Discussion about this post