ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের তরুণ শাহ মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে আসিফ (২৩) ছিলেন সৌদি আরবপ্রবাসী। সাড়ে তিন মাস আগে তিনি বাড়িতে আসেন। এর পর থেকে বাবা-মাকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। রাজি হচ্ছিলেন না মা-বাবা। অবশেষে টাকা দিতে বাধ্য হন মা-বাবা।
মঙ্গলবার (৬ জুন) বিকেলে জেলা শহর থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে জাহিদুল একটি মোটরসাইকেল কেনেন। বুধবার (৫ জুন) দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রথম ঘুরতে বের হন। সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু। বেলা পৌনে একটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন জাহিদুল। এ সময় অপর দুই বন্ধু আহত হয়েছেন।
নিহত শাহ মো. জাহিদুল ইসলাম উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের শাহ মো. ফাইয়াজের বড় ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে জাহিদুল ইসলাম সৌদি আরবে যান। ১৯ ফেব্রুয়ারি বাড়ি আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে মা-বাবাকে চাপ দিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছিলেন মঙ্গলবার (৬ জুন)। পরদিনই সেই মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়েই হারালেন জীবন।
আরও পড়ুনঃ হজ করতে গিয়ে আরও এক বাংলাদেশির মৃত্যু
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জাহিদুল আজ দুপুরে দুই বন্ধুকে নিয়ে নতুন কেনা মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে যাচ্ছিলেন তাঁরা। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন জাহিদুল। বেলা পৌনে একটার দিকে সরাইলের কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে অতিক্রম করার সময় সড়কের পাশে পড়ে যায় মোটরসাইকেলটি। এতে জাহিদুল ইসলাম মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদরে নেওয়ার পথে মারা যান। তাঁর সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু সামান্য আহত হন। তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
জাহিদুলের বাবা শাহ মো. ফাইয়াজ আহাজারি করে বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থেকে চলে আসছে মোটরসাইকেল কেনার জন্য। তিন মাস ধরে সে মোটরসাইকেলের জন্য চাপ দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার (৫ জুন) টাকা দিয়েছি। মোটরসাইকেল কিনে এক দিনও পার করতে পারল না। আমার বুক খালি করে চলে গেল। আমি বলব, কোনো বাবা যেন তাঁর অল্প বয়সের ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে না দেন। আমি যদি মোটরসাইকেল কিনে না দিতাম, আজ ছেলে হারাতাম না। কেউ এ কাজ করবেন না।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘মোটরসাইকেলে তিনজন ছিলেন বলে জেনেছি। আরোহী কারও মাখায় হেলমেট ছিল না। বেপরোয়াভাবে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে অতিক্রম করতে গিয়ে সড়কের পাশের ব্লকে পড়ে যান। এতে জাহিদুলের মাথায় আঘাত লাগে। এ আঘাতেই মারা গেছেন। লাশ পরিবারের জিম্মায় রয়েছে। মোটরসাইকেলটি পরিবারের লোকজন সড়ক থেকে তুলে নিয়ে গেছেন।’
এ এ/
Discussion about this post