বাসের সিট ধরাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের অনুষদ ভবনের সামনে আইন ও আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে ছেড়ে যাওয়া একটি ডাবল ডেকার বাসে আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের তিন শিক্ষার্থী তাদের বন্ধুদের জন্য সিটে ‘জ্যাকেট’ রেখে দুটি সিট ধরে রাখে। পরে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সুমন অভ্র বাসে উঠে জ্যাকেট সরিয়ে ওই সিটে বসেন। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আল-ফিকহের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সিহাব ও রাকিব কথা বলতে গেলে সুমন রাকিবের শার্টের কলার ধরেন। এতে তাদের মাঝে হাতাহাতি হয় এবং সুমনের মুখে আঘাত পান।
সুমন মুঠোফোনে ঘটনাটি প্রক্টরকে জানালে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাস ক্যাম্পাসে পৌঁছালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। সুমন বিষয়টি আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জানালে তারা গিয়ে প্রধান ফটকে গাড়ি আটকায়। এ সময় তারা বাসের সামনের গ্লাস ভাঙচুর করে বলে জানান বাসের চালক। পরে আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীরাও সেখানে উপস্থিত হন। রাত ১০টার দিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উভয়পক্ষকের শিক্ষকদের নিয়ে অনুষদ ভবনের প্রক্টর অফিসে আলোচনায় বসেন। এ সময় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনে অপেক্ষা করেন।
আলোচনা শেষে রাত সাড়ে ১১টায় দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে প্রক্টর বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানায়। তারা চলে যাওয়ার সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ বললে অনুষদ ভবনের সামনে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানকে ধাক্কা দেয়। আল-ফিকহ্ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে ঝাল চত্বরে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
শিক্ষার্থীদের থামাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও আহত হন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের টেন্টের পেছনে কিছু বাঁশের লাঠিসোঁটা জড়ো করে রাখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, রোববার এ বিষয়ে আমরা আবারও বসবো। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টির সমাধান করা হবে।
এ ইউ/
Discussion about this post