শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইরানের নারী অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি নতুন করে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই বিচার কার্যক্রম গতকাল রবিবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইরানের কারাগারগুলোয় নারী বন্দিদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যৌন নিপীড়ন চালান এমন অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এজন্য কারাবন্দি নার্গিস নতুন করে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন বলে গত শনিবার জানিয়েছে তার পরিবার।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ইভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন নার্গিস। সেখান থেকে পাঠানো এক অডিও বার্তা পাঠান তিনি। পরে তার সমর্থকদের মাঝে তা ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে তিনি ইরানি নারীদের বিরুদ্ধে শাসক দলের পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের নিন্দা জানিয়েছেন।
একাধিক দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নার্গিস মোহাম্মদীকে ১২ বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার আইনজীবী মোস্তফা নিলি বলেছেন, ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর’ নতুন অভিযোগের সুরাহা করার জন্য তাকে রোববার আদালত ডাকা হবে। তবে ইরানি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নার্গিস ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা বার্তায় তিনি বলেছেন, শাসক দলের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও তাদের এই কর্মকাণ্ডের কথা ফাঁস করার কারণে চতুর্থবারের মতো তাকে ‘অন্যায় ও প্রহসনমূলক আদালতের কাঠগড়ায় আনা হয়েছে’। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী দিনা গালাইবাফের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তাকে বিচারের জন্য ডাকা হয়েছে বলে অডিওতে তিনি দাবি করেছেন। গালিবাফকে একটি মেট্রো স্টেশনে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় তারা তাকে হাতকড়া পরায় এবং যৌন হয়রানি করে বলে অভিযোগ আনা হয়। আটকের পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নার্গিসের পরিবার বলছে, বিচার কার্যক্রম প্রকাশ্যে হওয়া উচিত। এর ফলে সাক্ষী ও ভুক্তভোগীরা সবার সামনে নারীদের ওপর রাষ্ট্রকাঠামোর চালানো যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ৫১ বছর বয়সী নার্গিস। ইরানে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করায় সম্মানজনক এ পুরস্কার পান তিনি। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে নার্গিস কারাগারে আছেন। প্যারিসে বসবাস করা স্বামী–সন্তানদের সঙ্গে বহু বছর দেখা করার সুযোগ পাননি তিনি। এমনকি কারাবন্দী থাকায় নার্গিস নিজে উপস্থিত হয়ে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। নরওয়ের রাজধানী অসলোর সিটি হলে নার্গিসের সন্তান তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
Discussion about this post