জিতে গেলো বাংলাদেশ, জনতার আদালতে হেরে গেলো রাষ্ট্রের মূল ভিত সরকারপ্রধান। তাইতো এ উদযাপন বিজয়ের, এ আবেগ পরমানন্দের। তারুণ্যে ভর করে এসেছে এ কাঙ্ক্ষিত জয়, প্রশংসার জয়রথ তো কেবল শুরু।
উল্লাস তাই বাধাহীন। শৃঙ্খল মুক্ত ও স্বাধীন। যেন বহুকালের বদ্ধ ঘরে উঁকি দিয়েছে এক টুকরো লাল উদীয়মান সূর্য। সে নক্ষত্রে ভর করেছে বাংলাদেশের মুক্তি ও গণতন্ত্র।
এ মুক্তির আনন্দ সীমাবদ্ধ থাকেনি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া তো বটেই, দেশ কাল সীমানার গণ্ডিতে কি স্বাধীনতার সুখকে আটকানো যায়?
তাইতো চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রতিবাদের ভাষা, প্রতিরোধের আগুন কয়েক গুণ হয়ে জ্বলেছে প্রবাসীদের মনে। শুধুমাত্র কথা বলতে পারেননি বলে কত অভিমান জমা আছে! শুধু মাত্র কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছিলো বলে কত মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে!
সে আক্ষেপ, হতাশা একটু একটু করে পরিণত হয়েছে ক্ষোভে। বিস্ফোরণ তো একদিন হবারই কথা। হয়েছেও তাই। সেটাও সুখের। হাজার মাইল দূর থেকে এ আনন্দে গা ভাসিয়েছেন প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের লক্ষ লক্ষ প্রবাসীর।
১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১, বীর বাঙালির ইতিহাস তো বরাবরই গণঅভ্যু্ত্থানের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনায় মুক্তিলাভের।
আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি তো অসাম্প্রদায়িকতার বার্তা দেয়। এ মাটির পলল বুকে তো সংস্কৃতি শেকড় প্রোথিত।
এইবার সে আবেগ ছুঁয়ে গেলো মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৭ টি রাজ্যে। দুবাইতেও ছড়িয়ে পড়েছে সে আনন্দ। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু থেকেই ছিলো হামলা মামলা সহিংসতায় ভরা। কয়েক দফায় বন্ধ ছিলো ইন্টারনেটের সংযোগ। ভিনদেশের প্রবাসী তাঁরা। প্রার্থনা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। বারবার অনুযোগ করেছেন, আক্ষেপ করেছেন, অনুতাপে পুড়েছেন। এত সহজে কি এতদিনের আক্ষেপ কমবে!
সাবেক প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের খবরে তারাও ভাসলেন আবেগে, ফেটে পড়লেন উচ্ছ্বাসে। এ আনন্দের আতিশয্য তো তাঁদেরই প্রাপ্য। রেমিট্যান্স যোদ্ধা তারা। দেশের বিপদে কি করে চুপ থাকেন। তাইতো এ আনন্দের তাঁরাও সহযোদ্ধা।
আবেগের বেগ তো কোনো যুক্তি মানে না। তাইতো নিজেরা মিষ্টি বিতরণ করে দুবাইতে তুলে ধরলেন বাংলাদেশের পতাকা। আবেগে ভাসলেন নিজেরা, ভাসালেন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকেও।
এ যাত্রা চলতে থাকুক, তারুণ্যে ভর করে আরো অনেক জয়গাঁথা লিখুক লাল সবুজের ছোট্ট এই দেশ, এই কামনা সকল প্রবাসী বাংলাদেশির।
টিবি
Discussion about this post