বছর দুয়েক আগে তাহিয়া তাসনিমের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়। প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে এই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ছেলে কাজী সাগর। রাজধানীর লালবাগ এলাকার বাসিন্দা দুজনই। গত বছরের এপ্রিলে বিয়ে করেন তারা। আগের বিয়ের কথা জানার পর সাগরের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ শুরু হয় তাহিয়ার। সময় সংবাদের প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-
বিবাহিত হয়েও ‘ডেটিংগত ২০ মার্চ রাতে তাহিয়াকে তার বাবার বাসায় একা পেয়ে হত্যা করেন সাগর। তাহিয়ার পরিবারের অভিযোগ, ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে নিয়মিত বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতেন সাগর।
তাহিয়ার বাবা তাজুল ইসলাম জানান, বিয়ের পর তাহিয়া জানতে পারে তার স্বামী আগেও বিয়ে করেছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ হলে একপর্যায়ে তাহিয়া শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে এখানে চলে আসে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন তাহিয়া বাসায় একা ছিল, তার মা কর্মস্থলে ছিল। আমি নামাজে যাওয়ার আগে মেয়েকে বলে গিয়েছিলাম, কেউ আসলে দরজা যেন না খোলে। কিন্তু তার স্বামী দারোয়ানকে ডেকে দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসায় ফিরে দেখি, খাটের পাশে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাজুল বলেন, ‘ওর মুখটায় মাইরা থেঁতলাইয়া নাক-মুখ একপাশ কালো কইরা, চোখে রক্ত আইসাা গেছে, কী যে বীভৎস অবস্থা। কার কাছে বিচার চামু, কার কাছে?’
তাহিয়ার মা বলেন, ‘মেয়েটাই তো আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল। মেয়ে আর ফিরে আসবে না। এখন আমি চাই সুষ্ঠু বিচার।’
লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্যশৈনু বলেন, তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা রেকর্ড করে তদন্ত চলমান। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এবং আরও বিস্তারিত অনুসন্ধানে আসল ঘটনা জানা যাবে। আমরা অভিযুক্তকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এ ঘটনায় লালবাগ থানায় সাগরকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন তাহিয়ার বাবা। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডেটিং অ্যাপের কারণে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বাড়ছে। আর এ থেকে পারিবারিক কলহ, এমনকি হত্যাকাণ্ডও ঘটছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এই অ্যাপগুলো বন্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি মানুষকেও এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
এম এইচ/
Discussion about this post