দরজায় কুরবানির ঈদ। শেষ মুহুর্তে সারাদেশে চলছে গরু কেনা বেচার হিড়িক। এরই মধ্যেই এক গরুর দাম শুনেই হতবাক পুরো বিশ্ব । কেননা এই গরুর দাম রেকর্ড করল গিনেজ বুকে। এমনই এক গরুর সন্ধান মিলল লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে।
এই গরুকে শুধু একবার চোখের দেখা দেখতেই ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। দানবাকৃতির এই গরুর দাম চার মিলিয়ন ডলার, যা টাকার অঙ্কে ৪৭ কোটি। এর নাম ভিয়াতিনা-১৯ এফআইভি মারা মুভিস। গায়ের রং তুষারের মত সাদা। নিলামে বিক্রি হওয়ার পরই বিশ্ব রেকর্ডে নাম লিখিয়ে ফেলেছে এই গরু কেননা এর আগে এত চড়া দামে কোন গরু বিক্রি হয় নি। গরুটির গড় ওজন অন্যান্য গরুর থেকে তুলনামুলক বেশি। এর ওজন ১১০০ কেজি অর্থাৎ ২৪০০ পাউন্ড এর চেয়ে বেশি।
ব্রাজিলের নেলোর জাতের এই গরুর এমন দামের কারণে একার পক্ষে কেনা বেশ মুশকিল। তাই এই গরুর একাধিক মালিকানা থাকবে এটা সহজেই অনুমেয়। ২০২২ সালের এক নিলামে পেরেইরা নামের একটি কোম্পানি ৮ লাখ ডলারে গরুটির অর্ধেক মালিকানা লাভ করে এবং বাকি অর্ধেকের মালিকানা অন্য পক্ষের। এই বিশালাকৃতির গরুটি এখনও পর্যন্ত অনেক অনেক পুরস্কার জিতেছে। তাঁর মধ্যে একটি হল টেক্সাস ভিত্তিক চ্যাম্পিয়ন অব দ্য ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার মিস সাউথ আমেরিকা পুরস্কার।
আরও পড়ুনঃ নিজ এলাকায় ঈদগাহ’র উদ্বোধন করলেন প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী
বহু বছর আগে ভারতের অন্ধপ্রদেশ এর নেলোর জেলা থেকে এই গরু ব্রাজিলে নেয়া হয়েছিল। এই জেলার নামানুসারেই এই গুরুর জাতের নামকরন করা হয়েছে। বিশ্বে গরুর মাংস রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। গবাদি পশু শিল্প বিশ্বের উদীয়মান শক্তিধর দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উৎস। তাই ব্রাজিলের সরকারও গরুর মাংসের নতুন নতুন রপ্তানি বাজার ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।মাংস উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষে থাকার জন্য ব্রাজিলের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফসল হলো ভিয়াতিনা-১৯। এই ধরনের মাংসবহুল জাত তৈরির জন্য বছরের পর বছর কাজ করছে দেশটি। আর তারই সফল বাস্তবায়ন হচ্ছে ভিয়াতিনা-১৯।
এই জাতের গরুগুলি খুব দ্রুত বড় হয়। তবে এখনই এই জাতের গরুগুলিকে মাংসের বদলে দ্রুত বংশ বিস্তারে মনোযোগ দিচ্ছে দেশটি। ফলে খামারিরাও এই গরুগুলোর ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংগ্রহ করে ভ্রূণ তৈরি করে, তা অন্য গরুর গর্ভে দিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এবং আরও জানা যায় ভিয়াতিনা-১৯-এর ডিম্ব কোষ সংগ্রহের জন্য কেউ কেউ আড়াই লাখ ডলার বা প্রায় তিন কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করছেন। এই গরুর মালিকের একজন নে পেরেইরা। পেরেইরার মেয়ে লরানি মার্টিন্স হলেন একজন গবাদিপশু চিকিৎসক।আর এই জাত নিয়ে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত। তাঁদের ইচ্ছা, পরবর্তীতে যেন সারা বিশ্বের মানুষই এই জাতের গরুর মাংস খেতে পারেন। তাই এর উৎপাদনের দিক মূল লক্ষ্য এখন তাঁদের।
এ এ/
Discussion about this post