প্রথম ম্যাচ জিতেও সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বড় রানের মাঠেও যে সফরকারীরা মাত্র ১১০ রানের পুঁজি গড়েছিল। তবুও জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন শেখ মেহেদী ও শরীফুল ইসলামরা। তবে শেষদিকে ঝড় তুলে সেই জয় প্রায় ছিনিয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার জিমি নিশাম।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোরে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ১৪.৪ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৯৫ রান তুলতেই শুরু হয় বৃষ্টি। খেলা আর মাঠ না গড়ানোয় বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে এগিয়ে থাকা নিউ জিল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ১-১ ব্যবধানের সমতায় শেষ হলো সিরিজ।
মেহেদী হাসান এবং শরিফুল ইসলামই যা ১১০ রানের পুঁজিকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করলেন। অন্য বোলারদের আর কেউ নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। অন্যদিকে সেই জিমি নিশামই শেষ মুহূর্তে ঝড় তুলেছিলেন। যদিও বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইন ডিএল মেথডে ১৭ রানে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা।
প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ স্যান্টনার-সোধির ঘূর্ণিতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার চার বল আগেই সফরকারীরা ১১০ রানে অলআউট হয়ে যায়। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ কেবল শান্ত’র ১৫ বলে ১৭ রান। এছাড়া তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে ১৬ এবং আফিফ হোসেন ১৩ বলে ১৪ রান করেন। এছাড়া বলার মতো রান পাননি কেউই।
কিউইদের হয়ে ১৬ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন স্যান্টনার। এ ছাড়া সাউদি, মিলনে ও সিয়ার্স প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। কেবল সোধি উইকেট না পেলেও, নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ৮ ওভার ৩ খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪৯ রান।ভয়ঙ্কর হওয়ে ওঠা ফিন অ্যালেনকেও বোল্ড করেছেন শরিফুল ইসলাম। কিন্তু এরপরই জিমি নিশাম এবং মিচেল সান্তনার মিলে দ্রুত কিউইদের রান এগিয়ে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। ২০ বলে ২৮ রানে নিশাম এবং সান্তনার ২০ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪ ওভার খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। এরপর বৃষ্টি শুরু হওয়া বল আর মাঠে গড়ায়নি। আরেকটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল। এর আগে বে ওভালে আগে ব্যাটিং করা কোনো দলই (৮ ম্যাচ) হারেনি, যেখানে বাংলাদেশই প্রথম!
এদিকে,২০২৩ সালে বাংলাদেশ খেলেছে ৫০টি ম্যাচ। নিজেদের ৩৭ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে এক বছরে এর আগে এতগুলো ম্যাচ খেলেনি টাইগাররা। বছরের শেষ দিনে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেই ম্যাচের অর্ধশত পূরণ করলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
অথচ, বছরের শুরুতে প্রথম দুই মাস কোনো ম্যাচই খেলেনি বাংলাদেশ। বছরের পরের ১০ মাসে খেলেছে এই ৫০ ম্যাচ। এর মধ্যে ৪টি টেস্ট, ৩২টি ওয়ানডে এবং ১৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে টাইগাররা।
রেকর্ড ম্যাচ কেরার বছরে টি-টোয়েন্টিতে কোনো সিরিজ হারেনি টাইগাররা। সব মিলিয়ে মোট চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে তিনটিতে জয় এবং একটি সিরিজ ড্র করেছে তারা।
বছরের শুরুতে মার্চে ইংল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিলো বাংলাদেশ। একই মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। এরপর গত জুলাইতে আফগানদেরকে ২ ম্যাচের সিরিজে হারিয়েছে সাকিবের দল। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ৩ ম্যাচের সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করলো বাংলাদেশ।
এস আর/
Discussion about this post