সরমাট মিসাইল পরীক্ষায় রাশিয়া ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ এই মিসাইলটির পরীক্ষায় এমন বিপর্যয় দেখা যায়।
ম্যাক্সার টেকনোলজিসের তোলা ২১ সেপ্টেম্বরের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, পলেসেটস্ক কসমোড্রোমে মিসাইল উৎক্ষেপণ সাইটের একটি সাইলোতে প্রায় ৬০ মিটার চওড়া একটি গর্ত হয়েছে। এর আশেপাশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্রও ফুটে উঠেছে, যা এর আগে তোলা ছবিতে ছিল না।
আরএস-২৮ সরমাট আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলটি যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে হাজার মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে পারমাণবিক হামলার জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে এর উন্নয়ন প্রক্রিয়া বিভিন্ন বিলম্ব ও পরীক্ষার ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে।
জেনেভাভিত্তিক রুশ পারমাণবিক বাহিনী প্রকল্পের বিশ্লেষক পাভেল পডভিগ বলেন, ‘সব কিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি একটি ব্যর্থ পরীক্ষা ছিল। বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। মিসাইল এবং সাইলোর সাথে একটি গুরুতর ঘটনা ঘটেছে।’
লন্ডনের আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা ইনস্টিটিউটের (IISS) গবেষক টিমোথি রাইট জানান, সাইলোর আশেপাশে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত দেয়, মিসাইল উৎক্ষেপণের পরপরই এটি ব্যর্থ হয়েছিল। তিনি মন্তব্য করেন, সম্ভাব্য কারণ হতে পারে প্রথম ধাপের বুস্টার ঠিকমতো প্রজ্বলিত হয়নি বা মিসাইলের একটি যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটেছে, যার ফলে এটি সাইলোতে বা তার কাছাকাছি এসে পড়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ জেমস অ্যাকটন বলেন, সরমাট পরীক্ষার ব্যর্থতার বিষয়টি অত্যন্ত সম্ভবনাময় এবং স্যাটেলাইট চিত্র থেকে ধারণা করা যায় যে এটি একটি বড় বিস্ফোরণ ছিল।
এ বিষয়ে ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি এবং সাম্প্রতিক সময়ে সারমাটের পরীক্ষা নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি।
১১৫ ফুট লম্বা সারমাট ক্ষেপণাস্ত্রটি পশ্চিমা বাহিনীর কাছে শয়তান-২ নামেও পরিচিত। এর পাল্লা ১৮ হাজার কিলোমিটার। ২০৮ টনের বেশি ওজন নিয়ে সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা যায়। রুশ গণমাধ্যম জানায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যমাত্রায় আঘাতের জন্য ১৬টি পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে পারে। পুতিন জানিয়েছিলেন এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার শত্রুদের কাছে নেই।
এ ইউ/
Discussion about this post