লক্ষ্মীপুরে ব্যাংকের ভেতরেই ছেঁড়া নোট পরিবর্তনে কাউন্টারে পাঠিয়ে এক নারী গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারক চক্র ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনার একটি সিসি ক্যামেরার ৬ মিনিটি ৪৬ সেকেন্ডের ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ইতিমধ্যে ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে গত ২৩ মার্চ লক্ষ্মীপুর চক বাজার মসজিদ মার্কেটে ইসলামী ব্যাংকের জেলা শাখার ভেতরেই প্রতারক চক্রের তিন সদস্য অভিনব কৌশলে সেলিনা আক্তার নামে ওই গ্রাহকের টাকা নিয়ে যায় প্রতারক চক্র।
একইদিন তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার ২৪ দিন পার হলেও এখনো পর্যন্তকে কাউকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। ভুক্তভোগী সেলিনা লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৩ জন লোক আগ থেকে ব্যাংকে অবস্থান করছিলেন।
এরমধ্যে একজনের পরনে পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি ও মুখে সাদা দাঁড়ি ছিল। অন্য দুজন শার্ট-প্যান্ট পরা ছিলেন, তাদের একজনের মুখে কালো দাঁড়ি ছিল। তাদেরকে অহেতুক ব্যাংকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। টাকা জমা দেওয়ার জন্য রশিদ রাখার স্থানেই তাদেরকে বেশি সময় দেখা যায়।
একপর্যায়ে পাঞ্জাবি পরিহিত লোকটি সোফায় গিয়ে বসেন। সেখানেই টাকা গুনছিলেন ভুক্তভোগী সেলিনা। একপর্যায়ে পাঞ্জাবি পরিহিত লোকটি তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শার্ট-প্যান্ট পরিহিত লোকের কাছে গুণতে দেন। তাকে টাকা গুণতেও দেখা যায়। তখনো টুপিওয়ালা লোক ওই নারীর সঙ্গে বসে ছিলেন।
তাদের আরেক সদস্য চারপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। এর মধ্যে যিনি টাকা গুনছিলেন, তিনি তার মানিব্যাগ থেকে কি যেন (টাকা) বের করে ওই নারীকে দেন। পরে ভুক্তভোগী কাউন্টারের দিকে গেলে টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান চক্রের তিনজন লোক।
সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমার ব্যাংক হিসেবে ২ লাখ টাকা ছিল। টাকা উঠিয়ে সোফার ওপর এসে বসি। এরমধ্যে এক লাখ টাকা গুণে সাইট ব্যাগে রেখেছি। অপর এক লাখ টাকা গোনার সময় এক মুরুব্বি এসে বলে মা তোমার পাশে একটু বসি, এ কথা বলে তিনি বসছেন। তিনি আমাকে বলেন, টাকাগুলো চেক করে নিও, টাকা ছেঁড়া পড়ে। উনি আমাকে বলে দেখো- আমার দুই হাজার টাকা ছেঁড়া পড়েছে। এরপর কি হয়েছে আমি জানি না, আমি উনাকে সব টাকা দিয়ে দিয়েছি। একটু ছেঁড়া নোট নিয়ে আমাকে কাউন্টারে পাঠিয়েছে পরিবর্তনের জন্য। নোটগুলো পরিবর্তন করে এসে দেখি তারা নেই। তারা তিনজন লোক ছিলেন।’
লক্ষ্মীপুর ইসলামী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী বলেন, ‘ঘটনার দিনই ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী গ্রাহক অন্য একজনকে টাকা গুণতে দিয়েছে, ওরাই টাকা নিয়ে গেছে। টাকা গুণতে সমস্যা হলে আমার কাছেও তিনি আসতে পারতেন। অচেনা অজানা লোকদের টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি।’
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হক বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। তা পর্যালোচনা করে প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
এম এইচ/
Discussion about this post