সাদকে এগ্রো দেশের একমাত্র ফার্ম যে ‘বংশমর্যাদাসম্পন্ন’ গরু বিক্রি করে দেশ জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার পাত্র হয়েছে। তারই খামার থেকে কেনা ছাগল দেশ জুড়ে হুলুস্থুল কান্ড ঘটিয়েছে। এই ছাগলের নাম মস্তান রাখাটা যেনো নামের স্বার্থকতা। ছাগলের মস্তানিতে ধরা পরেছে একের এক দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা। সাদেক এগ্রো শুধু মাত্র ছাগল বিক্রি করে বির্তকিত হয় নি। বরং ‘বংশমর্যাদাসম্পন্ন’ ব্রাহামা গরু বিক্রি করে বির্তকিত করেছেন।
সম্প্রতি সাদেক এগ্রোর বংশ মর্যাদাসম্পন্ন গরুর বিজ্ঞাপনে সবার নজর কাড়ে বিশাল আকারের ব্রাহামা গরু। কয়েক বছর আগে জালিয়াতি করে এ জাতের গরু আমদানি করে প্রতিষ্ঠানটি। তারপরই আলোচনায় উঠে আসে কোটি টাকা দামের এসব গরু। গরুটি ছিল ব্রাহমা জাতের। বিশ্বজুড়ে এ জাতের গরু বেশ জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে সেটি আমদানি নিষিদ্ধ। কিন্তু ঢাকার সেই খামারে এ গরু কীভাবে এল তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে নানা উঠে আসছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
জানা যায়, ব্রাহমা উন্নত মাংসল জাতের গরু। এটি যুক্তরাষ্ট্রের গরু হলেও এর আদিনিবাস ভারত উপমহাদেশে। তাই আমাদের এই উপমহাদেশের অন্যান্য গরুর মতো এর কুঁজ রয়েছে। ১৮৮৫ সালের দিকে মার্কিনরা ভারত উপমহাদেশের এই গরু আমদানি করে অন্যান্য ভালো জাতের গরুর সঙ্গে সংকরায়ণ করে ব্রাহমার এই জাত উদ্ভাবন করে। ১৯৩৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এই জাতের গরু প্রথম রপ্তানি করা হয়। পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিলসহ ৫০টির বেশি দেশে এ জাতের গরু লালনপালন করা হয়।
ব্রাহমা আকারে অনেক বড় জাতের গরু। ওজন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। জন্মের সময় একটি বাছুরের ওজন ১২০ থেকে ২০০ কেজি হয়ে থাকে। এগুলো উচ্চতায় ১২৮ থেকে ১৪৫ সেন্টিমিটার।
ব্রাহমা জাতের গরু আচরণে শান্ত প্রকৃতির। এগুলো লালনপালনও সহজ। এ জাতের গরু সাধারণ খাবার খেয়ে বেড়ে ওঠে। এ গরুর গায়ের রং ও সৌন্দর্য সহজে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আকার বৃদ্ধির সঙ্গে মাংসের ওজনও বৃদ্ধি পায়। এ গরুর মাংসের গুণও তুলনামূলক ভালো। ব্রাহমা গরু প্রতিবছর একটি করে বাচ্চা দেয়। এ গরু উষ্ণ ও আর্দ্র অঞ্চলে সহজে বেড়ে ওঠে, যার জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া এ গরুর জন্য খুবই উপযোগী। এর ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ায় সহজে কোনো রোগে সহজে আক্রান্ত হয় না।
তবে ব্রাহাম গরু মাংস বেশি দিলেও এটি বাংলাদেশে উপৎপাদনের নিষিদ্ধ করার অন্যতম কারণ গরুর আকৃতি অনুসারে দুধ তেমন দেয় না। যদি আমাদের দেশে এই গরু বাণিজ্যিক ভাবে পালন করা হয়, তাহলে দেশে গরুর দুধ উৎপাদন কমে যাবে। যার ফলে দেশে এই গরুর উৎপাদন নিষিদ্ধ।
এ জাতের গরু বাংলাদেশে পালন ও উৎপাদন নিষিদ্ধ না হলেও ২০১৬ সালে এক নীতিমালার মাধ্যমে এ জাতকে আমদানি নিষিদ্ধের তালিকায় রাখা হয়েছে। ব্রাহমা গরু লালনপালনের ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আইনে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে নীতিমালা অনুসরণ করে লালনপালন করতে হবে।
টিবি
Discussion about this post