ভূমধ্যসাগরে ভাসতে ভাসতে মৃত্যু দেখেছেন তারা, শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরছেন ৫ বাংলাদেশি!
আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ভোর সাড়ে ৫টায়, টার্কিশ এয়ারওয়েজের (TK-712) ফ্লাইটে দেশে ফিরছেন ভূমধ্যসাগরের উত্তাল ঢেউ, মৃত্যুর হাতছানি আর বন্দিদশার নির্মমতা পেরিয়ে বেঁচে ফেরা পাঁচ বাংলাদেশি। দীর্ঘ দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহায়তায় দেশে ফিরছেন:-
# মুন্সিগঞ্জের মোস্তাকিন সরকার
# শেরপুরের মোজাম্মেল হক
# মাদারীপুরের জিহাদ ফকির, রোমান হাওলাদার ও ইয়াসিন হাওলাদার
উন্নত জীবন ও ভালো কাজের আশায় ইউরোপের পথে পা বাড়িয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পাচারকারীদের মিথ্যা আশ্বাসে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ভয়ংকর পাচারচক্র তাদের মাফিয়াদের হাতে তুলে দেয়, শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের পরও তাদের আবার বিক্রি করা হয় অন্য চক্রের কাছে।
একপর্যায়ে পাচারকারীরা তাদের দিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার ‘গেম’ খেলায়। উত্তাল সমুদ্রে নৌকা ডুবে গেলে ভাসমান অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকেন তাঁরা। কারও ঠাঁই হয় সাগরের অতলে, কেউ হারিয়ে যায় চিরতরে। ভাগ্যক্রমে, আলজেরিয়ার কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে, কিন্তু মুক্তির বদলে অপেক্ষা করছিল কারাগারের নতুন দুঃস্বপ্ন।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও আলজেরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় দেশে ফিরছেন এই পাঁচজন। এর আগে, একই ঘটনার শিকার আরও আট বাংলাদেশিকে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ব্র্যাক ও টিআইপি (Trafficking in Persons) হিরো নেটওয়ার্কের সহায়তায় দেশে ফেরানো হয়েছিল।
এই পাঁচজন ফিরে আসছেন, কিন্তু এখনো কতজন পাচারকারীদের হাতে বন্দি? কতজন হারিয়ে যাচ্ছেন সাগরের অতলে, নামহীন কবর হয়ে?
মানব পাচার বন্ধ করতে হবে! নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে! যেন আর কোনো স্বপ্ন পাচারকারীদের ফাঁদে ধ্বংস না হয়, যেন আর কোনো পরিবার প্রিয়জন হারানোর শোক না পায়।
এম এইচ/
Discussion about this post