দেশে নতুন এক প্রজাতির চিংড়ি চাষের প্রবর্তন হয়েছে। ভিনদেশি ভেনামি চিংড়ি স্বপ্ন দেখাচ্ছে উপকূলীয় চাষিদের। কেননা প্রতি হেক্টর ঘেরে এর ফলন দেশি চিংড়ির চেয়ে প্রায় সাত থেকে আটগুণ বেশি। দ্রুত বর্ধনশীল ও লাভের অংক বেশি হওয়ায় ভিনদেশি এই চিংড়ি চাষে আগ্রহ বাড়ছে খুলনার চাষিদের।
গেল দুই বছরে বাণিজ্যিক চাষে সফলতার পাশপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও পৌঁছেছে দেশে উৎপাদিত ভেনামি চিংড়ি। এর চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন চাষি, রপ্তানিকারক ও মৎস্য কর্মকর্তারা।
জাল ভর্তি সাদাটে ভিনদেশী চিংড়ির নাম ভেনামি। দেশের মানুষের কাছে অপরিচিত হলেও বিশ্ব ভোক্তাদের কাছে রয়েছে বেশ কদর। কেননা দ্রুত বৃদ্ধির ক্ষমতা থাকায় হেক্টর প্রতি উৎপাদন বেশি হওয়ায় সস্তা দামে মিলে অহরহ।
রিপোর্টলিংকার ডটকমের গবেষণা বলছে, চিংড়ির আন্তর্জাতিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ এই জাতের দখলে। এছাড়া ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। যার একটি বড় অংশই থাকবে ভেনামি চিংড়ির দখলে।
এমনটা বুঝতে পেরে বাংলাদেশও এই চিংড়ি চাষের অনুমতি দেয় ২০২৩ সালে। আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে রপ্তানিকারকদের সহযোগিতায় উপকূলীয় ঘেরে ভেনামির চাষ শুরু করেন চাষিরা। তারা বলছেন, মাত্র ৩ মাসেই বিক্রিয়যোগ্য হওয়ায় দেশি চিংড়ির চেয়ে হেক্টরে ফলন বেড়েছে কমপক্ষে আটগুণ।
এক চাষি বলেন, এটি বেশি উৎপাদন হয়। বছরে ৩বার চাষ করা যায়। আরেক চাষি বলেন, এ চিংড়ির রোগবালাই খুবই কম। উৎপাদন ব্যয় কম। আবার দাম বেশি পাওয়া যায়।
চিংড়ি রপ্তানিকারকদের তথ্য বলছে, জেলায় এ বছর ৫ চাষি উৎপাদন করেছেন ৮৯ টন ভেনামি। যার ১৩ টন ইতোমধ্যে হয়েছে রপ্তানি। তারা বলছেন, উৎপাদন বাড়লে বাড়বে রপ্তানিও।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহসভাপতি হুমাযুন কবীর বলেন, এটি অল্প জায়গায় বেশি পরিমাণে উৎপাদন করা যায়। ফলে ভেনামি আমাদের জন্য জরুরি। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
মৎস্য কর্মকর্তাদের দাবি, ভেনামি চিংড়ি চাষে প্রতি হেক্টর থেকে লাভ আসে প্রায় আট লাখ টাকা। খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, বহির্বিশ্বে ভেনামি চিংড়ির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
বিশ্ববাজারের ৬০ শতাংশ দখল করে রেখেছে ভেনামি। তাই গলদা ও বাগদার পাশাপাশি এটির চাষ বাড়াতে হবে। এতে বাজার ধরা যাবে। রপ্তানি আয় উপার্জন করা যাবে।
এ জেড কে/
Discussion about this post