পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন প্রবাসীরা। তবে মৃত্যুর পর তাদের দেশে পাঠাতে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। মরদেহ বহনের খরচ জোগাড় করতে হাফিয়ে ওঠেন প্রবাসে থাকা আত্মীয় ও সহকর্মীরা। তাই প্রবাসে মৃত্যুর পর বাংলাদেশিদের মরদেহ বিনা খরচে আনার দাবি করেছেন তারা।
কুয়েত থেকে প্রবাসীর মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য কমিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আগে টিকিটের মূল্য ছিল ২৫৫ দিনার, বর্তমানে যা কমিয়ে ১৭৫ দিনার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কুয়েত থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে একজন প্রবাসীর মরদেহ পাঠাতে টিকিটের মূল্য ছিল ২৭৫ দিনার, যা বর্তমানে ১৯০ দিনার করা হয়েছে।
কুয়েতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজার আবুবকর সিদ্দিক বলেন, “এক সময় প্রবাসীদের মরদেহ বিনামূল্যে দেশে পাঠানো হতো। কিন্তু সেই সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অনেকে অনুরোধ করেছিলেন ভাড়া কমানো যায় কি না। সেই মানবিক আবেদন বিবেচনা করে ভাড়া আগের চেয়ে অনেক কমানো হয়েছে।” কুয়েত প্রবাসীরা জানান, সেখানে কম বেতনের কাজ করা সাধারণ প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। কেউ মারা গেলে প্রবাসীদের কাছে ঘুরে ঘুরে চাঁদা তুলে মরদেহ দেশে পাঠাতে হয়। তারা বাংলাদেশ সরকার ও বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পূর্ণ বিনা খরচে প্রবাসীর মরদেহ বহনের দাবি জানান।
জানা যায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একসময় বিনাখরচে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসীদের লাশ বহন করলেও বর্তমানে তা বন্ধ রেখেছে। এমনকি লাশ পাঠাতে বিমানের টিকিট পান না বলেও অভিযোগ প্রবাসীদের। তবে কোনো কোনো নিঃস্ব প্রবাসীর লাশ পাঠাতে বিশেষ সহযোগিতা দিয়ে থাকে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট। দুবাই প্রবাসী জহিরুল ইসলাম বলেন, “অসহায় প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠাতে অত্যন্ত বেগ পেতে হচ্ছে। বিমান আগে প্রবাসীদের মরদেহ বিনা খরচে নিয়ে যেতো, এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেয়ায় আরো বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে প্রবাসীরা।”
আল আইন প্রবাসী সিআইপি শেখ ফরিদ বলেন, “এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, বিমান যখন ক্ষতির মুখোমুখী থাকে, লোকসান থাকে তখন সরকার ভর্তুকি দেয়। ভর্তুকির এই টাকা জনগণের, প্রবাসীদের। জনগণের টাকায় যদি বিমানকে ভর্তুকি দেয়া হয় তবে বিমানেরও উচিত প্রবাসীদের মরদেহ বিনা খরচে বহন করা।”
Discussion about this post