মসজিদ মহান আল্লাহর ঘর। মুমিনের জীবনের সবক্ষেত্রে এর গভীর প্রভাব রয়েছে। এটা হলো প্রতিটি মুমিনের জন্য একটি জীবন্ত প্রতিষ্ঠান। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী দুনিয়ার সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হলো মসজিদ। আর কবর হলো, মুসলমানের শেষ সমাধি।
অনেকে জানতে চান, মসজিদের সামনে কবর থাকলে নামাজ শুদ্ধ হবে কিনা? এর উত্তর হচ্ছে, ইসলামি শরিয়তে কবর সামনে রেখে, কবরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা নিষেধ। হজরত আবু মারসাদ আল গানাভী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি বলেছেন,
لاَ تُصَلُّوا إِلَى الْقُبُورِ وَلاَ تَجْلِسُوا عَلَيْهَا অর্থ: আপনারা কবরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করবেন না এবং কবরের ওপর বসবেন না। (মুসলিম: ২১৪১)
উপর্যুক্ত এ নির্দেশনা কবরের সামনে দাঁড়িয়ে কবরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কবর ও নামাজির মাঝে যদি দূরত্ব থাকে, দেয়াল, রাস্তা ইত্যাদির অন্তরায় থাকে, তাহলে কেবলার দিকে কবর থাকলেও নামাজের ক্ষতি হবে না।
কোনো মসজিদের সামনে যদি একটি কবর বা কবরস্থান থাকে, তাহলে ওই মসজিদের সামনে নামাজ পড়া যাবে। যেহেতু মসজিদের দেয়াল মুসল্লিদের ও কবরের মাঝে থাকে।
উল্লেখ্য যে, ইসলামে কবরকে কেন্দ্র করে মসজিদ নির্মাণ বা মসজিদের ভেতরে কাউকে কবর দেয়া নিষিদ্ধ। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لَعَنَ اللهُ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ অর্থ: আল্লাহ ইয়াহুদ ও খ্রিস্টানকে অভিসম্পাত করুন (অথবা করেছেন), তারা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মসজিদে পরিণত করেছে। (বুখারি: ১৩৩০; মুসলিম: ১২১২)
কবর অক্ষত রেখে অথবা নিচে কবর দেয়ার সুযোগ রেখে ওপরে মসজিদ নির্মাণ করাও নাজায়েজ। কারণ কবরের ওপর মসজিদসহ যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে নবীজি নিষেধ করেছেন। জাবের (রা.) বলেন,
نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أَنْ يُجَصّصَ الْقَبْرُ، وَأَنْ يُقْعَدَ عَلَيْهِ، وَأَنْ يُبْنَى عَلَيْهِ অর্থ: আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর চুনকাম করতে, কবরের ওপর বসতে এবং কবরের উপর কোনো কিছু নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম: ৯৭০)
তবে অনেক পুরোনো কোনো কবরস্থান যদি এমন হয় যে, এক সময় কিছু মানুষকে কবর দেয়া হলেও প্রয়োজনীয়তা না থাকায় সেখানে আর কবর দেয়া হয় না এবং অনেক আগে কবরস্থ লাশগুলো মাটির সাথে মিশে গেছে, তাহলে ওই জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করা ও নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে।
এম এইচ/
Discussion about this post