মাগুরার নির্যাতিত সেই শিশুর মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় ওই শিশুর বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
শনিবার (০৮ মার্চ) সেই শিশুর মায়ের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন তিনি। এ সময় শিশুটির মাকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতার কথা বলেন।
ফোনালাপে তারেক রহমান বলেন, মাগুরায় বিএনপির যত নেতাকর্মীরা আছেন, তারা সবাই শিশুটির পাশে থাকবেন।
ন্যায়বিচার পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করব। শিশুটির সঙ্গে যারা অন্যায় করেছে তারা যেন আইন অনুযায়ী শাস্তি পায়।
এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, শিশুটির চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন আমরা চেষ্টা করব, আমাদের দলের অবস্থান থেকে।
শিশুটির মা তার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন তারেক রহমানের কাছে। এটা শুনে তিনি আবারও বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব শিশুটি যাতে ন্যায়বিচার পায়।
পরে দলের নেতারা সবসময় পাশে থাকবে বলে আবারও আশ্বস্ত করেন তারেক রহমান। সবশেষে তিনি শিশুটির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
শনিবার (৮ মার্চ) শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে এ সংক্রান্ত সার্বিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তারেক রহমান।
পরে নয়ন সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটির সব রকম চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন তারেক রহমান। তার পরিবারের দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। দরিদ্র শিশুটির পরিবার যেন কোনো অসহায়ত্ব বোধ না করে, সেদিকে তিনি আমাদের খেয়াল রাখতে বলেছেন। একই সঙ্গে আইনিয় সহায়তাসহ দোষীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায় সেদিকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আইয়ুব আলী জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি। তবে প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দুই জন পুলিশ হেফাজতে আটক থাকলেও শনিবার সকালে বড় বোনের শ্বশুর ও স্বামীর পর তার ভাশুর ও শাশুড়িকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ঢামেক সূত্র জানিয়েছে, শিশুটির চিকিৎসায় চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি তার চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করবে ঢামেক।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার জিসিএসের মাত্রা চারে নেমে এসেছে। শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটাপন্ন, এখনও জ্ঞান ফেরেনি।
তিনি জানান, হত্যার চেষ্টার সময় শিশুটি গলাতে যে আঘাত পেয়েছে সেটার জন্য নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। শরীরে জ্বর আছে এবং নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিশুটির মৃত্যু নিয়ে কাউকে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই তার জন্য দোয়া করুন।
এদিকে শিশুটির মামা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এখনও সেখানেই আছে। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা জেলা সদরের নান্দুয়ালী মাঠপাড়ায় বোনের শ্বশুরের ধর্ষণের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশুটি। নির্যাতনের পর শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথম জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢামেকে নেওয়া হয়।
এ ইউ/
Discussion about this post