দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে অনুভূত হচ্ছে কনকনে ঠান্ডা। কিছু কিছু এলাকায় তা কিছুটা কমে আসতে পারে। আগামী চার-পাঁচ দিনে সারা দেশের তাপমাত্রা বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। এ সপ্তাহে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তারা জানায়, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মাঘের শেষে এসে আবারও রংপুর বিভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গত দুদিন ধরে প্রচণ্ড শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে পুরো অঞ্চল। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায়। ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে মৌসুমের শেষের দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে অঞ্চলটিতে। এ ছাড়া দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৯ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি এবং রংপুরে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। বিশেষ করে দিনাজপুর ও তেঁতুলিয়ায় এমন অবস্থা আরও সপ্তাহখানেক চলতে পারে। তারপর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে।
এদিকে একজন আবহাওয়া কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুয়াশার ঘনত্ব রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে। যা ভোর ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। ফলে যানবাহনগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক, দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষেরা। প্রচণ্ড শীতের কারণে কর্মহীন অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে তাদের। অপরদিকে শীতজনিত রোগ কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া আর শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলী জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৯ ও ১০ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে বেডের বাইরেও মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশুরা। এর বাইরে হাসপাতালের আউটডোরেও প্রতিদিন শত শত শিশুকে নিয়ে আসছেন তাদের মায়েরা। এ অবস্থায় শিশুদের সকালে এবং সন্ধ্যার পরে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরোতে পরামর্শ দেন তিনি।
এ জেড কে/
Discussion about this post