দালালের মিথ্যে আশ্বাসে চীনে পাড়ি দেবার স্বপ্নে বিভোর পাহাড়ী এক তরুণী। মিষ্টি কথায় পা দেন দালালের ফঁাদে। ওই তরুণী ভেবেছিলেন স্বপ্নটা এবার সত্যি হতে চলেছে। স্বপ্ন পুরণের এ যাত্রায় সাথে নেন তার এক বান্ধবীকেও। যে মাধ্যমে চীনে যাচ্ছেন তাদের সাথে সব কথাবার্তাও শেষ হয়। পরিবারের কাছে বিদায় নিয়ে ১ জুন ঢাকার উদ্যেশ্যে ঘর ছাড়েন ঐ দুই তরুণী। কথা ছিল ঢাকায় আসার পর তাদের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর পাড়ি দেবেন স্বপ্নের দেশ চীনে। কিন্তু সেই স্বপ্নই যেন কাল হয়ে দাঁড়ালো। ঢাকায় আসার পর ওই দুই তরুণীকে একটি কক্ষে আটকে রাখে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি। বিস্তারিত থাকছে প্রতিবেদনে
তরুনীদের চীনে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছিলো একটি প্রতারক চক্র। তাদের ফাঁদে পা দেই খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার দুই তরুণী। যতক্ষণে বুঝতে পারেন চীনে পাঠানোর কথা বলে মানবপাচার করে আসছে চক্রটি, ততক্ষণে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায় ওই দুই তরুণীর। মেয়ের কোন খবর না পাওয়ায় থানায় জিডি করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এরপর তাদের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা শুরু করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অবশেষে ৯ জুন রাজধানীর উত্তরার একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ওই দুই তরুণীসহ আরো তিন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। সেইসাথে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশি হেফাজতে তাদের দীর্ঘ সময় জিগ্যাসাবাদ করা হয়। এরপর আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসে।
বাংলাদেশ থেকে চীনে নারী পাচার কাণ্ডের মূল হোতা খাগড়াছড়ির দিঘীনালার সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি। তিনিই মূলত বিভিন্নভাবে মেয়েদের প্রলোভন দেখাতেন। এরপর চক্রের বাকি সদস্যের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। মেয়েরা যখন পুরোপুরীভাবে বিশ্বাস করতেন তাদের চীনে পাঠানো হবে, ঠিক তখনি তাদের কৌশলে ডেকে নিয়ে আটকে রাখা হতো। এরপর সুযোগ বুঝে পাচার করে দেওয়া হতো।
মোটা টাকা, গহনা ও আইফোনের ফাঁদে পা দিয়ে এর আগেও অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। তবুও যেন লোভ সামলানোর যুদ্ধে বার বার পরাজিত হয়ে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছেন ভুক্তভোগীরা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, শুধু আইনের প্রয়োগ করে মানবপাচার রোধ সম্ভব নয়। নিজেদের সচেতন হওয়াটাও অত্যান্ত জরুরী।
এ এস/
Discussion about this post