আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: ইসরাইলকে সমর্থন ও ক্ষোভের মুখে মালয়েশিয়ার অন্যতম ফাস্ট ফুড চেইন রেস্টুরেন্ট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কেএফসি। গত কয়েক মাস ধরে দেশটিতে চলমান ফিলিস্তিন-ইজরাইল ইস্যুতে শুরু হওয়া ইজরাইল পণ্য বয়কটকারীদের অভিযোগ, প্রথম থেকে অন্যায্য ভাবে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন করে আসছে কেএফসি।
তারই জের ধরে, কিউএসআর ব্র্যান্ডস মালয়েশিয়া হোল্ডিংস বারহাদ, টানা কয়েক মাস খুলে রাখার চেষ্টার পর দেশব্যাপী ১০০ টিরও বেশি কেএফসি’র আউটলেট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় চীনা দৈনিকের এক প্রতিবেদনের বরাতে দ্য ষ্টার অনলাইন ও নিউ স্ট্রাইটিস টাইমসের তথ্য অনুসারে, কিউএসআর ব্র্যান্ডস, যারা মালয়েশিয়ায় কেএফসি’র ফাস্ট-ফুড চেইন ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিচালনা করে, তারা জনিয়েছে, ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী ১০৮ টি আউটলেট সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে বলে নিশ্চিত করেছে বিটিটিভি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশটির কেলান্তান রাজ্যে সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে এ বয়কট। সেখানে প্রায় ৮০% বা ২১টি আউটলেট বন্ধ করা হয়েছে, এরপর জোহর রাজ্যে ১৫টি আউটলেট বন্ধ রয়েছে।
তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, তারা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই এবং কম্বোডিয়াতে ৮৫০টির বেশি কেএফসি চেইন ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে। সেই সাথে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে ৫০০ টিরও বেশি পিৎজা হাট রেস্টুরেন্ট চেইন ফাস্ট ফুড সেবা সুনামের সাথে পরিচালনা করে আসছে।
কিউএসআর ব্র্যান্ডস, যারা মালয়েশিয়ার কেএফসি ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিচালনা করে, তারা সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই এবং কম্বোডিয়াতেও চেইন ফাস্ট ফুড সেন্টার পরিচালনা করছে। সাথে তারা কেএফসি’র পাশাপাশি পিজাহাট, আয়াম্স এবং লাইফ ব্রান্ডকেও পরিচালনার জন্য ২০২২ সালে পৃথক ভাবে ৩ জন পরিচালক নিয়োগ করে বলেছিলেন যে, আমরা আমাদের বোর্ডকে রিফ্রেশ করার সাথে সাথে, নতুন এই এপয়েনমেন্টগুলো সম্মিলিতভাবে কিউএসআর ব্র্যান্ডগুলোকে কৌশলগত ভাবে তদারকি করবে এবং কর্পোরেট গভর্নেন্সের গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড পূরণ করতে সক্ষম হবে।
এদিকে দেশটির তীব্র বয়কটে কেএফসি ছাড়াও, স্টারবাকস এবং ম্যাকডোনাল্ডের মতো আরও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড গাজায় চলমান সহিংসতার মধ্যে ইসরায়েলকে সমর্থনের কারণে তীব্র বয়কটের মুখে পড়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইল, ফিলিস্তিনের উপর আক্রমণ চালাতে শুরু করে। তখন থেকেই তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার অভিযোগ ওঠে কেএফসির বিরুদ্ধে।
চলমান এই যুদ্ধে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় বিষয়ক অফিস এবং এনবিসির তথ্য অনুসারে, গত ২৪ এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ৩৫,০০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪, ২৬২ জন ফিলিস্তিনি এবং ১৪১০ জন ইসরায়েলি ছাড়াও ৯৭ জন সাংবাদিকের মধ্যে ৯২ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক, ২ জন ইসরায়েলি সাংবাদিক এবং ৩ জন লেবানিজ সাংবাদিক রয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার ২২৪ জন কর্মী সহ ১৭৯ জনেরও বেশি কর্মচারী নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
টিবি
Discussion about this post