দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহর তেল আল-সুলতান এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছে তার শেষ মুহূর্তের করুণ আর্তি। গত ২৩ মার্চ ইসরায়েলি হামলায় রাদওয়ানসহ ১৫ জন প্যারামেডিক ও সিভিল ডিফেন্স কর্মী নিহত হন।
৬ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি উদ্ধার করেছে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস)। ভিডিওতে অবিরাম গুলির শব্দ, আহতদের আর্তনাদ এবং শাহাদাত বাক্য পাঠের করুণ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরও অনেক প্যারামেডিক ও সিভিল ডিফেন্স কর্মী জীবিত ছিলেন বলে ভিডিওতে দেখা গেছে, যা ইসরায়েলি বাহিনীর ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের ইঙ্গিত দেয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, তারা আলো বা জরুরি সংকেতহীন সন্দেহজনক যানবাহনে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু ভিডিওতে অ্যাম্বুলেন্সের জরুরি আলো এবং প্যারামেডিকদের রিফ্লেক্টিভ ইউনিফর্ম স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, যা ইসরায়েলি বাহিনীর দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করে।
আহত সহকর্মীদের বাঁচাতে গাড়ি থেকে নামার সময় ইসরায়েলি সেনারা প্যারামেডিকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর রাদওয়ান বারবার শাহাদাত বাক্য পড়তে থাকেন। তার কণ্ঠ ক্ষীণ হতে থাকে এবং শেষ মুহূর্তে তিনি বলেন, ‘মা, আমাকে ক্ষমা করো… মানুষকে বাঁচাতেই এই পথ বেছে নিয়েছিলাম। হে আল্লাহ, আমাকে শহিদ হিসেবে কবুল করো।’ এরপর শোনা যায়, ‘সেনাবাহিনী চলে এসেছে…’।
গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, ধ্বংস হওয়া অ্যাম্বুলেন্স থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি গণকবরে নিহতদের লাশ পাওয়া গেছে। কিছু মরদেহ হাত-পা বাঁধা এবং মাথা ও বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। একজনের মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল, অন্য মরদেহগুলোও ছিন্নভিন্ন অবস্থায় ছিল। বাসাল এই হামলাকে ‘আধুনিক ইতিহাসের নজিরবিহীন এক বর্বরতা’ বলে অভিহিত করেন।
এ ইউ/
Discussion about this post