সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫ টায় মায়ের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকের। কথোপকথনের এক পর্যায়ে জলদস্যুরা তার ফোনটি কেড়ে নেয়।
তৌফিকের মা দিল আফরোজ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ছেলে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে কান্নাকাটি করছিল। আমাদের কাছে দোয়া চাচ্ছিল। বার বার ক্ষমাও চাচ্ছিল। আমি তাকে নানা রকমের দোয়া পড়তে অনুরোধ করি। একপর্যায়ে সে আমাকে মা বলে ডাক দিলে, সাড়া দেয়ার আগেই বুঝতে পারি, কে যেন তার ফোনটি কেড়ে নিয়েছে। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারিনি।’
তৌফিক খুলনা মহানগরীর বয়রার করীম নগর এলাকার সুর মোহাম্মদ সড়কের ২০/১ নং বাড়ির বাসিন্দা মো. ইকবালের তৃতীয় ছেলে। বাড়িতে যেতেই প্রতিবেশীদের বাড়তি উপস্থিতি জানান দিচ্ছে এখানে কিছু হয়েছে। প্রধান ফটক পেড়িয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় ঢুকতে সবার চোখে মুখে অজানা ভয় আর আতঙ্ক।
এলাকার মসজিদেও তারাবির পর দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বাড়িতে প্রতিবেশীদের বাড়তি উপস্থিতি থাকলেও কারও মুখে তেমন কোনো কথা নেই। সবাই চুপ করে অন্যের দিকে তাকিয়ে উত্তর খুঁজছে কোনো একটা প্রশ্নের । তৌফিকের সঙ্গে এখন কী হচ্ছে। তিনি সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসবেন তো।
তৌফিকের স্ত্রী জোবায়দা নোমান জানান, তাদের দুই সন্তান আসফিয়া তাহসিনা ৭ বছর এবং ৫ বছরের ছোট ছেলে আহমেদ রুসাফি। জানুয়ারী মাসের শেষে জাহাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন তিনি।
তৌফিকের মা দিল আফরোজা বলেন, খবর পাওয়ার পর থেকে আমরা প্রচন্ড উদ্বেগ উৎকন্ঠায় আছি। আমাদের হাতে কিছু করারও নেই। এমন কোনো উপায় নেই যে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসবো। প্রধানমন্ত্রী চাইলে অনেক কিছু পারেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি আমার সন্তানসহ সকল নাবিককে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। আমার ছেলেকে ফেরত চাই।
২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন জাহাজে চাকরি করছেন তৌফিক। তার বড় দুই ভাই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও তৌফিকের লেখাপড়া শিখে সাগরে ঘুড়ে বাড়ানোর চাকরি নেন। গত বছরের নভেম্বর মাসে এমডি আব্দুল্লাহতে যোগদান করেন।
এ এস/
Discussion about this post