মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারদলীয় বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ বিজিপি ও সেনা সদস্যকে অবশেষে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে দু’দেশের প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে ইমিগ্রেশন ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিটিএ ঘাটে তাদের হস্তান্তর করা হয়। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে টাগবোটে করে তাদের তুলে দেওয়া হয় গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের জাহাজে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষে হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় থাকা কক্সবাজারের এডিএম মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, প্রথম দফায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার ইনানীর নৌবাহিনীর জেটি দিয়ে মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি ও কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর গত দেড় মাসে নতুন করে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির আরও ২৮৮ সদস্য। নানা প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করে গভীর সাগরে মিয়ানমারের জাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন স্বদেশে ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে পুরো কার্যক্রম শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েসহ প্রতিনিধি দলকে বিদায় জানান বিজিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বা বিজিবির কোনো কর্মকর্তাই গণমাধ্যমকে কিছু বলতে রাজি হননি। প্রত্যাবাসন এলাকায় ভিড়তে দেওয়া হয়নি গণমাধ্যমকর্মীদেরও।
মিয়ানমারের বিজিপি, সেনা সদস্যদের সঙ্গে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল লড়াইয়ে টিকতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন বিজিপি ও সেনা সদস্যরা। তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে সীমান্ত কিংবা স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন অস্বস্তিতে। কিন্তু তাদের দ্রুত সময়ে ফেরত দেওয়ায় স্বস্তিতে আছেন সীমান্তের বাসিন্দারা।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার বলেন, মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের আশ্রয় দিতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের নানামুখী সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। আর মানুষের মধ্যে তৈরি হয় ভীতিকর পরিস্থিতি। কিন্তু দ্রুত সময়ে তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর কারণে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে এবং ভীতিকর পরিস্থিতি কিছুটা কেটে গেছে।
এম এম
Discussion about this post