প্রায় মানুষেরই একটি বড় সমস্যা হলো মুখের বিরক্তিকর দুর্গন্ধ। এ সমস্যা আপনার সুন্দরভাবে কথা বলার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাস কমায়। এমন সমস্যা থেকে কীভাবে মুক্তি পাবেন বিস্তারিত জানুন আজকের আয়োজনে।
মুখে ব্যাকটেরিয়া জমার কারণে সাধারণত দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষণ মুখ বন্ধ করে রাখলেও এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অনেককেই। সকাল দিকে এ সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
ব্যস্তজীবনে মুখে দুর্গন্ধ হলে তা আপনাকে ঠেলে দেয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। এটি আশেপাশের মানুষের জন্য তৈরি করে জটিলতা। তাই অস্বস্তিকর এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলতে পারেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের ছোটোখাটো বদভ্যাস ও অনিয়মের কারণে মুখে দুর্গন্ধের সমস্যা দেখা দেয়। দাঁত, মাড়ি বা মুখের যত্ন নিলে এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন। পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়ও দারুণ কাজ করে এ সমস্যা থেকে মুক্তিতে। যেমন-
১। লবঙ্গ: মুখের দুর্গন্ধ এবং মাড়ি ফোলা থেকে মুক্তি দিতে পারে লবঙ্গ। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং দাঁতের অন্যান্য সমস্যা, যেমন রক্তপাত এবং দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি কমায়। তাই মুখের দুর্গন্ধ কমাতে কয়েক টুকরো লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন।
২। মধু এবং দারুচিনি: মধু এবং দারুচিনি উভয়েই শক্তিশালী অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুখে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হতে দেয় না এবং মাড়িকেও সুস্থ রাখে। তাই দাঁত এবং মাড়িতে নিয়মিত মধু ও দারুচিনির পেস্ট লাগালে দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং এমনকি মুখে দুর্গন্ধের সমস্যাও কমে যায় অতি দ্রুত।
৩। উষ্ণ লবণ পানি: উষ্ণ লবণ পানি দিয়ে গার্গল করার উপকারিতা কারোরই অজানা নয়। কোনো খাবার খাওয়ার পর এই অভ্যাস আপনার মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে দেবে না। গলা ব্যথা বা গলা ভাঙার ক্ষেত্রে লবণ পানির গার্গল কার্যকরী হওয়ার পাশাপাশি এটি মুখের খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং দুর্গন্ধ কমাতেও পারে।
৪। পানি: সারাদিনে পানি কম পান করলেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। পানি মুখ থেকে ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সাহায্য করে। আপনার যদি মুখে দুর্গন্ধের সমস্যা হয় তাহলে দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫। লেবুর রস: মুখের দুর্গন্ধ যখন বেড়ে যায়, তখন লেবুর রস পান করা উচিত। লেবু পানি মুখের জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলে। এতে দুর্গন্ধ কমে আসে। তাই খাওয়ার পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন।
৬। পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতাকে প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার বলা যায়। কারণ অল্প সময়ের মধ্যে এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। তাই মুখে দুর্গন্ধ হলে ২-৩টি পুদিনা পাতা নিয়ে চিবোতে থাকুন। পাশাপাশি খেতে পারেন পুদিনা পাতার শরবত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য প্রায়ই পুদিনা পাতার কথা বলেন।
৭। এলাচ: একাধিক রোগের প্রতিষেধক এলাচ। দীর্ঘ সময় মুখে এলাচ রেখে দিলে দুর্গন্ধ একেবারেই কমে যায়। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এলাচের মাধ্যমে চিকিৎসাকে মোক্ষম দাওয়াই হিসেবে বিবেচনা করেন। রোজা রেখে এটি সম্ভব নয়। তাই সেহরির সময় এলাচদানা চিবিয়ে খেতে পারেন।
এ এ/
Discussion about this post