মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর দেশ ইরান। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের চোখের কাটা হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের সব হুমকি ধামকিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছে তেহরান। তাই প্রশ্ন জাগে কিসের বলে আমেরিকার মতো দেশকে টেক্কা দিয়ে যাচ্ছে ইরান। তাদের সামরিক সক্ষমতা কতোটুকু সেটা জানারও আগ্রহ মানুষের। সত্যিকার অর্থে যুদ্ধ শুরু হলে ইরান কি পারবে চোখে চোখ রেখে লড়াই চালিয়ে যেতে? যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এর উত্তর।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমানে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার সক্রিয় সেনাসদস্য রয়েছে ইরানের। সংরক্ষিত সদস্য রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার জন। এছাড়া কমপক্ষে দেড় লাখ ইসলামিক রিভুলিউশানারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি সেনা মজুদ আছে দেশটির। ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী সামরিক ফোর্স বলে ধরা হয় আইআরজিসিকে। এছাড়া দেশটির সামরিক প্রশিক্ষিত জনসংখ্যা ২ কোটি ৩৬ লাখ ১৯ হাজার ২১৫ জন। দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে ট্যাংক রয়েছে এক হাজার ৬৩৪টি। সাঁজোয়া যানের সংখ্যা দুই হাজার ৩৪৫। সেনাসদস্যদের ব্যবহারের জন্য কামান রয়েছে দুই হাজার ১২৮টি। পাশাপাশি এক হাজার ৯০০টি রকেটচালিত কামান রয়েছে তেহরানের।
ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মতে, স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের দিক থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। এসব ক্ষেপনাস্ত্র অনেক ক্ষেত্রেই সৌদি আরব ও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের দাবি- গেলো কয়েক বছর ধরেই আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ইরান।
ইরানের বিমানবাহিনীর সংগ্রহও বেশ সমৃদ্ধ। এই বাহিনীর কাছে আছে ৫০৯টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। এর মধ্যে রয়েছে – ফাইটার বিমান ১৪২টি, অ্যাটাক বিমান ১৬৫টি, হেলিকপ্টার ১২৬টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১২টি। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের জন্য ১০৪টি ও পরিবহনের জন্য ৯৮টি উড়োজাহাজ প্রস্তুত রয়েছে বাহিনিটির। ইরানের নৌবাহিনীর কাছে কোনো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার না থাকলেও তাদের ফ্রিগেট রয়েছে ছয়টি, করভেট রয়েছে তিনটি এবং সাবমেরিন রয়েছে ৩৪টির মতো।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গেলো কয়েক বছরে ইরানের ড্রোন সক্ষমতা বেড়েছে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০১৬ সাল থেকেই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে ইরান। এছাড়া মিত্রদের কাছে নিজেদের ড্রোন প্রযুক্তিও বিক্রি করেছে দেশটি। শুধুমাত্র পারমাণবিক শক্তির বেলায় এখন পর্যন্ত পিছিয়ে রয়েছে ইসলামিক বিপ্লবের এ দেশ। তবে শত্রুদেশগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম সংগ্রহে রয়েছে তেহরানের।
Discussion about this post