যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করা এক বাংলাদেশি সমকামী তরুণের আবেদন নাকচ করেছে আদালত। সিলেটের ৩৮ বছর বয়সি ওই তরুণ দাবি করেন, বাংলাদেশে তার যৌন অভিমুখিতা প্রকাশ করা নিরাপদ ছিল না, তাই ২০০৯ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। দেশটিতে পৌঁছানোর পর আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন।
তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ট্রাইব্যুনাল তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। বিচারক বলেন, “তিনি প্রকৃত সমকামী নন, বরং স্থায়ী বসবাসের জন্য ভান ধরেছেন।” আদালত মন্তব্য করে, “আবেদনকারী যে সমকামী, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।” আদালতে প্রদত্ত প্রমাণ, যেমন সমকামী পর্নোগ্রাফি দেখার ছবি এবং এলজিবিটিকিউ+ ইভেন্টে উপস্থিতি, বিচারকের কাছে যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি। বিচারক বলেছিলেন, “ছবিগুলো সাজানো ছিল এবং এটি আবেদনকারীর দাবিকে দুর্বল করে দিয়েছে।”
আবেদনকারীর দাবি ছিল, বাংলাদেশে তার সমকামী সত্তা প্রকাশ করা অসম্ভব ছিল, কারণ সেখানে সমকামীতা অবৈধ এবং সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, “যদি কেউ আমার যৌন অভিমুখিতা জানত, আমার জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ত।” লন্ডনে বসবাসরত ওই তরুণ বলেন, “বাংলাদেশে সমকামী হওয়া শুধু অবৈধ নয়, সহিংসতার শিকার হতে পারে, এমনকি হত্যাও করা হতে পারে।”
আদালত তার আবেদন নাকচ করার পর, ওই বাংলাদেশি পুনরায় ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আপিল করেন। তবে ২০১৮ সালের রায়ের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জুনে তার আবেদন পুনরায় প্রত্যাখ্যান হয়। ব্রিটিশ হোম অফিস তার প্রমাণের ভিত্তিতে বলেছে, “আপনার প্রমাণ দেখাচ্ছে না যে আপনি ঝুঁকিতে রয়েছেন।”
অভিবাসন অধিকার বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেন, হোম অফিস এলজিবিটিকিউ+ প্রার্থীদের প্রতি অবিশ্বাসী মনোভাব পোষণ করে, যার কারণে অনেক প্রার্থী আশ্রয় পেতে সংগ্রাম করেন। ওই তরুণ বলেন, “আশ্রয় প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জিং এবং হতাশাজনক।” তিনি আরো বলেন, “ছয় বছর ধরে আমি নানা বাধা পেরিয়ে এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।”
Discussion about this post