যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণ প্রথমবারের মতো ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নীতিগত পর্যায়ে কার্যকর সিদ্ধান্তের ঘাটতি, ব্যয় বৃদ্ধি ও আয় কমে যাওয়ার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে দাবি করেছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্সের।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতি অনুসারে, গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির সর্বমোট সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে দেশের জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। দেশটির ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষত কভিড-১৯ মহামারীর অভিঘাতে আরো গভীর হয়েছিল। মহামারীর কারণে ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে পড়ে। তাছাড়া কভিডজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারে বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা বিতরণ করে ওয়াশিংটন। ফলে অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধারে ঋণ গ্রহণের পরিমাণও বাড়তে থাকে দেশটির।
ট্রেজারি বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে মহামন্দার প্রারম্ভে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। তার ১০ বছর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে জাতীয় ঋণ প্রায় ২০ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছায়। বাইডেন প্রশাসনের সময় তা আরো বেড়েছে। চড়া সুদহারের ফলে শুধু সুদ বাবদ ব্যয় মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য।
এদিকে রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকে ২০২৪ সালের ব্যয় কমানোর দাবি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতেই বসতে যাচ্ছে কংগ্রেস অধিবেশন। সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯ জানুয়ারি ও আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ডেডলাইন ঠিক করা হয়েছে।
মার্কিন আইনপ্রণেতারা ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য জরুরি সহযোগিতার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে আর্থিক ব্যয়সংক্রান্ত বিল নিয়ে কংগ্রেসে জটিলতা বাড়লে ওয়াশিংটনের জন্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমঝোতায় পৌঁছানোটা আরো বেশি কঠিন। কারণ এ মুহূর্তে নভেম্বরের প্রেসিডেন্সিয়াল ও কংগ্রেশনাল নির্বাচনই প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি ফর আ রেসপনসিবল ফেডারেল বাজেটের প্রেসিডেন্ট মায়া ম্যাকগিনিজ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ঋণকে হতাশাজনক প্রাপ্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার দাবি, রাজনৈতিক নেতৃদের মধ্যে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনীহা থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মায়া ম্যাকগিনিজ বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, নীতিনির্ধারকরা ঋণ কমানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। সেটা কর বাড়ানোর মাধ্যমেই হোক কিংবা ব্যয় কমিয়ে আনার মাধ্যমে কিংবা একটা অর্থনৈতিক কমিশন গঠনের মাধ্যমে কিংবা সবগুলোকেই অবলম্বন করে।’
এ জেড কে/
Discussion about this post