যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ১০ জনের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। সেখানে নতুন নতুন দাবানল দেখা যাচ্ছে এবং এসব নিয়ন্ত্রণের অনেকটা বাইরে। তবে ঝোড়ো বাতাসের গতি কমায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ার গতি কিছুটা রুখতে পেরেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রাণহানি এড়াতে ইতোমধ্যে অনেক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জনশূন্য এসব এলাকায় লুটপাট এড়াতে রাত্রীকালীন কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লুটপাট প্রতিরোধে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা কারফিউ কার্যকর থাকবে।
এই কারফিউ ততদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে যতক্ষণ না কাউন্টি কর্মকর্তারা আদেশ তুলে না নেবেন। খালি করা এলাকায় জনসাধারণের উপস্থিতি এবং চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং চিকিৎসার প্রয়োজনে যারা চলাচল করছেন, তারা এর বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবেন। এদিকে, কারফিউ লঙ্ঘন করলে কমপক্ষে এক হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা বা সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে কাউন্টির মেডিকেল পরীক্ষক জানান, দাবানলে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে পৌঁছেছে। দাবানলে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, আরও ২ লাখ মানুষকে সতর্কতার আওতায় রাখা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের শেরিফ রবার্ট লুনা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দাবানলের কারণে শুধু ইটন এলাকায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। প্যালিসেইডসের দাবানলে আরও ৫ হাজার ৩০০ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে কাউন্টির ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্টনি ম্যারন জানান, দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসার পর মানুষের দেহাবশেষ শনাক্তকারী দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাবে।
এদিকে, দাবানলে বিপর্যস্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে লুটপাটের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় বোর্ড অব সুপারভাইজারসের প্রধান ক্যাথরিন বার্জার জানান, অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। দুর্বৃত্তরা পরিত্যক্ত ওই বাড়িগুলোয় লুটপাট চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, এটি গ্রহণযোগ্য নয়। লুটপাটে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। এখন পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর আগে, গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসের অদূরে একাধিক স্থান থেকে শুরু হয় ভয়াবহ এই দাবানল। এরপর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে থাকেন।
সূত্রঃ চ্যানেল ২৪
এ ইউ/
Discussion about this post