যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে ইসরায়েলে কয়েক দফায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। এতে অনেকেই হতাহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) আল-জাজিরা ও সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানান, ইরান যেসব এলাকায় হামলা হয়েছে সেখানে কালো ধোঁয়া দেখা গেছে। একাধিক ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে। অনেককে ভবনের বাইরে ও ভেতরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগে ইসরায়েলও ইরানের আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে। এতে ৯ জন নিহত ও কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছেন।
টানা ১২ দিন দুই পক্ষের সংঘাতের পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে এখন যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না!
এর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে নেতানিয়াহু সম্মত হয়েছেন। একইসঙ্গে যেকোনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ইসরায়েল কঠোর জবাব দেবে বলেও বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তবে, ইরানের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।
এম এইচ/
Discussion about this post