হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হত্যা নয়, প্রতারণার মাধ্যমে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল গ্রেফতার সোহাগ মিয়ার মূল উদ্দেশ্য। এই ব্যক্তি পেশায় একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার মামলাও রয়েছে। ইতিপূর্বে প্রতারণার মামলা গ্রেফতারও হয়েছিলেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকাল ৪টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন বলেন, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া (মোবারকপুর) গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া ওরফে মো. সুমেল মিয়া গত ২৮ জুন রাতে নিজের পরিচয় অজ্ঞাত রেখে চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায়কে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে তার কাছে সংসদ সদস্য সায়েদুল হকের ফোন নম্বর চান। তখন ওসি নম্বর কেন প্রয়োজন, সেটি জানতে চান। উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার জরুরি কথা আছে। পুলিশ কর্মকর্তা সংসদ সদস্যের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে ফোন নম্বর দেননি। কিছুক্ষণ পরই তিনি হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পাঠান এবং পরে তা মুছে (ডিলিট) দেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি আরেকটি খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে লেখা ছিল, ‘ব্যারিস্টার সুমনের কিছু শত্রু আছে, যারা তার ক্ষতি করতে পারে।’ এটিও পরে তিনি মুছে দেন। এ বিষয়ে ২৮ জুন চুনারুঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ পুলিশ ও ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সমন্বয়ে পুলিশের একাধিক টিম এর রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে। মঙ্গলবার রাতে তাকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, অনুসন্ধানে জানা গেছে, সে একজন পেশাদার প্রতারক। ইন্টারনেটে ভারতীয় একটি প্রতারণার গল্প দেখে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রতারণার কৌশল শেখে। তার অংশ হিসেবেই সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু যেহেতু সংসদ সদস্যের মোবাইল ফোন নম্বর তার কাছে ছিল না তাই সে ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল সংসদ সদস্য হুমকির কথা শুনলেই হয়তো বলবেন, কারা হত্যা করতে চায় তাদের নাম বলো। তখন সে টাকা চাইবে। কিন্তু তার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। উল্টো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। এরপর সে পালাতে চেয়েছিল। বার বার স্থান বদলিয়েছে। অবশেষে তাকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা করা হবে।
এ এস/
Discussion about this post