মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা । আল্লাহর জিকির ও স্মরণে অন্তর প্রশান্ত হয়। পবিত্র কোরআনে জিকির শব্দটি বহু জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। বান্দার প্রতিটি আমল আল্লাহর কাছে খুব দামি। তাই ছোট-বড় কোনো আমল ও সৎকাজকে অবহেলা করা উচিত নয়। ছোট ছোট আমলও কেয়ামতের দিন বিপুল সওয়াবে পরিণত হতে পারে। এমন কিছু কালেমা রয়েছে যা মুখে উচ্চারনে খুব সহজ তবে মিজানের পাল্লায় বেশ ভারী।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন—
দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা বলা সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী। আর আল্লাহর কাছেও অধিক পছন্দনীয়। সেটি হলো, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।
(বুখারি, হাদিস : ৬৪০৬)
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।
অর্থ : মহান সেই আল্লাহ এবং তারই সকল প্রশংসা। মহান সেই আল্লাহ যিনি সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী।
কিয়ামতের দিন মানুষের কাজ পরিমাপের জন্য ‘মিজান’ তথা পরিমাপক স্থাপন করা হবে। কারও ভালো কাজের পাল্লা আবার কারও মন্দ কাজের পাল্লা ভারী হবে। তবে মুমিনের এমন কিছু আমল আছে, যা খুব সহজ বা হালকা মনে হলেও এর ওজন আমলের পাল্লায় অনেক ভারী হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি কিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদণ্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারও প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না। কোনো কাজ যদি তিল পরিমাণ ওজনের হয়, তবু আমি তা উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আমিই যথেষ্ট। (সুরা আম্বিয়া: ৪৭)
অন্যান্য হাদিসেও আল্লাহর প্রশংসাসূচক বাক্য উচ্চারণের অসামান্য ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। আবু মালিক আল-আশয়ারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী সবকিছুকে পূর্ণ করবে।’(মুসলিম: ২২৩)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ করা হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬৪)
মানুষের এখন নানান ধরনের ব্যস্ততা রয়েছে। কাজের ভিড়ে নিয়মিত নফল ইবাদত করা অনেকেরই সম্ভব হয়ে উঠছে না । কিন্তু যেকোন মুহূর্তে আল্লাহর প্রশংসায় তার জিকির করা— অনেক সহজ। এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয়া হয়নি। এমন কি জিকিরের ক্ষেত্রে ওজু করে নেয়ার প্রয়োজন পরে না। যে কোনো সময় হাটতে-চলতে আল্লাহর স্মরণে জিকির করা যাবে। কারন আমাদের মুখ সর্বদাই পবিত্র থাকে। এতে কাজেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে না।
তাই সহজ আমল হিসেবে অন্তত উপরোক্ত বাক্য দুইটি নিয়মিত পাঠ করতে পারি। এতে অজ্ঞাতে ঘটে যাওয়া আমাদের বিভিন্ন গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিবেন। পাশাপাশি অগণিত সওয়াব দান করবেন।
এস আই/
Discussion about this post