‘সূরা আল মুলক’পবিত্র কুরআনের ৬৭তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৩০টি, সূরাটি পবিত্র নগরী মক্কায় অবর্তীণ । সূরা মুলক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি সূরা। আল্লাহ তাআলার রাজত্ব-কতৃর্ত্ব ও মহত্ত্বের বর্ণনার মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ সূরা। এতে আসমান ও গ্রহ-নক্ষত্রের সৃষ্টি-কুশলতা ও নিপুণতা উল্লেখের মাধ্যমে তার কুদরতের কথা আলোচনা করা হয়েছে। যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করবে, পাঠকারীর জন্যে সূরাটি কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে,যতক্ষণ না তার পাঠকারীকে ক্ষমা করা হয় এবং তাকে কবরের আজাব থেকে হেফাজত করবে।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি হাদিস শোনাব, যা শুনে তুমি খুশি হবে? উত্তরে সে বলল, হ্যাঁ শোনান।
ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, তুমি নিজে সূরা মুলক পড় এবং পরিবারের সবাইকে ও প্রতিবেশীকে তা শিক্ষা দাও। কারণ এটি মুক্তিদানকারী ও ঝগড়াকারী।
কেয়ামতের দিন আল্লাহর সঙ্গে ঝগড়া করে তার পাঠকারীকে সে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করবে এবং কবরের আজাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার একান্ত কামনা যে, এই সূরাটি আমার প্রত্যেক উম্মতের অন্তরে গেঁথে (মুখস্ত) থাকুক। (ইবনে কাসির)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোরআন শরীফে ৩০ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে, যা তার তিলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করা পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। সূরাটি হলো তাবারকাল্লাযি বিয়াদিহিল মুলক। (আবু দাউদ)
এছাড়া সূরাটি নিয়মিত পাঠের আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত সূরা মূলক তিলাওয়াতের আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে। (তিরমিজি)
সূরা মুলক ৪১ বার তিলাওয়াত করলে সব বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঋণ পরিশোধ হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা মুলক তিলাওয়াত না করে রাতে ঘুমাতে যেতেন না। (তিরমিজি)
এ বর্ণনার উপর ভিত্তি করে আলেমরা এশার নামাজের পর সূরা মুলক তিলাওয়াতের আমল করার কথা বলেন।
আল্লাহর মহত্ব ও বড়ত্ব এবং জীবন-মরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্য বলে সূরাটি শুরু করা হয়েছে। তারপর আল্লাহর সৃষ্টি নৈপুন্যের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যারা এসব দেখেও অস্বীকার করে তাদের কঠোর হুশিয়ার করা হয়েছে। শেষের দিকে বড় একটা অংশ আল্লাহ তায়ালা তার সৃষ্টির বিভিন্ন উপাদানের উপমা দিয়ে মানুষকে ইমানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন।
এস আই/
Discussion about this post