তাকাসুর শব্দটি আরবি: كثرة থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর অর্থ প্রচুর ধন-সম্পদ সঞ্চয় করা। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হাসান বসরী (রহঃ) তফসীর করেছেন। এ শব্দটি প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা অর্থেও ব্যবহূত হয়।
ফজিলত পূর্ণ এই সূরাটির বাংলা অর্থ নিম্নরূপ:
(১) প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে।
حَتَّىٰ زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ
(২) এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
(৩) এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
(৪) অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِي
(৫) কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
لَتَرَوُنَّ الْجَحِيمَ
(৬) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে।
ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِي
(৭) অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য প্রত্যয়ে।
ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ
(৮) এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্ (সাঃ) একবার এ আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এর অর্থ অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা এবং আল্লাহ্র নির্ধারিত খাতে ব্যয় না করা। এই সূরাটির নাম হলো সূরা আত-তাকাসুর। সূরা আত-তাকাসুর পবিত্র কোরআনের ১০২ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৮ টি এবং রূকুর সংখ্যা ১টি। আত-তাকাসুর সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
ফজিলত:
রাসুল (সাঃ) একবার সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেন তোমাদের মধ্যে কারও এমন ক্ষমতা নেই যে, এক হাজার আয়াত পাঠ করবে। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেনঃ হ্যাঁ এক হাজার আয়াত পাঠ করার শক্তি কয়জনের আছে। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ কি সূরা তাকাসুর পাঠ করতে পারবে না ? উল্লেখ্য সূরা তাকাসুর দৈনিক এক বার পাঠ করা এক হাজার আয়াত পাঠ করার সমান। – (মাযহারী)
এ সূরার ফযিলতে আরেকটি হাদিস বলা হয়। তা হল:
من قرأ سورة التكاثر فكأنما أدى الشكر
“যে ব্যক্তি সূরা তাকাসুর পাঠ করল সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করল।” এ হাদিসের
ব্যাপারে শাইখ বিন বাজ রহ. বলেন: ليس له أصل “এর কোন ভিত্তি নাই।” অর্থাৎ এটি দুর্বল হাদিস।
তবে এই সুরা অন্যতম শিক্ষণীয় দিক হল, যারা পার্থিব ধন-সম্পদ এবং প্রাচুর্যের মোহে আখিরাতকে ভুলে যায় তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। সুতরাং সময় থাকতে তাদের সতর্ক হওয়া অপরিহার্য।
এস আই/
Discussion about this post