রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার চালু হওয়া কাউন্টারভিত্তিক গোলাপি বাস পরিষেবা নিয়ে দেখা দিয়েছে শ্রমিক অসন্তোষ। কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির চালক-শ্রমিকরা এ পরিষেবার আওতায় থাকতে আপত্তি জানিয়েছেন।
রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার চালু হওয়া কাউন্টারভিত্তিক গোলাপি বাস পরিষেবা নিয়ে দেখা দিয়েছে শ্রমিক অসন্তোষ। কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির চালক-শ্রমিকরা এ পরিষেবার আওতায় থাকতে আপত্তি জানিয়েছেন। এর জেরে সায়দাবাদ এলাকায় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে একাধিক পরিবহন কোম্পানির বাস গতকাল ঢাকার রাস্তায় দেখা যায়নি। এতে দেখা দেয় পরিবহন সংকট, ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।
কাউন্টারভিত্তিক এ পরিষেবা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সায়দাবাদের জনপদ মোড় অবরোধ করে রাখেন একদল পরিবহন শ্রমিক। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সায়দাবাদ এলাকায় জনপদের মোড়ে বাস শ্রমিকরা জড়ো হতে শুরু করেন। শতাধিক শ্রমিকের জমায়েত হওয়ার পর তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা ২০১৮ সালে প্রণীত সড়ক পরিবহন আইন বাতিলেরও দাবি জানান। শ্রমিকদের অবরোধে সায়দাবাদ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
পরিবহন শ্রমিকদের ভাষ্য, এমনিতেই তাদের বেতন কম। কাউন্টারে চালালে সবখান থেকে যাত্রী তোলা যাবে না। রাস্তার বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী না তুললে টাকা বেশি পাওয়া যাবে না। এ কারণে তারা কাউন্টারে নয়, আগের নিয়মেই বাস চালাতে চান।
প্রাথমিকভাবে ঢাকায় ২১টি কোম্পানির ২ হাজার ৬১০ গোলাপি বাস নামানোর দাবি করেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, রঙের কাজ চলায় অনেক বাস এখনো রাস্তায় নামতে পারেনি। পাশাপাশি ট্রাফিক কার্যক্রম জোরদার করায় অনেকেই মামলার ভয়ে বাস নিয়ে বের হচ্ছেন না।
গতকাল সরজমিন ঢাকার কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বাসের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। আব্দুল্লাহপুর থেকে বাড্ডা, রামপুরা রুটে নিয়মিত চলাচলকারী ভিক্টর পরিবহন, রাইদা ও তুরাগ পরিবহনের বাস চোখে পড়েছে হাতে গোনা। বাস না পেয়ে অনেক যাত্রীকে হেঁটে কিংবা বিকল্প বাহনে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
কাউন্টারভিত্তিক বাসসেবা প্রত্যাহারে চালক-শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক সাইফুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ চালক-শ্রমিকরা চুক্তিতে মালিকদের কাছ থেকে বাস নিয়ে তা বিভিন্ন রুটে চালাতেন। যাত্রী তুলতেন বিশৃঙ্খলভাবে। আমরা এ ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য কাউন্টারভিত্তিক পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। এতে কিছু চালক-শ্রমিক অসন্তুষ্ট। তবে আমরা এরই মধ্যে তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করার কাজ শুরু করেছি। কাউন্টারভিত্তিক বাস চালু হলে তা যেমন যাত্রীদের জন্য লাভজনক হবে, তেমনি পরিবহন চালক-শ্রমিকরাও লাভবান হবেন।’
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে কাউন্টার ও ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে বাস পরিষেবা প্রবর্তনের অংশ হিসেবে চালু হয়েছে গোলাপি বাস সার্ভিস। এর উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দাবি, এ পরিষেবায় ২১টি কোম্পানির ২ হাজার ৬১০টি বাস যোগ দিয়েছে। এসব বাসে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে ওঠা, ভাড়া আদায়ে চালু হয়েছে ই-টিকিটিং পদ্ধতি। পর্যায়ক্রমে মিরপুর, গাবতলী ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকেও একই ধরনের বাস পরিষেবা ভিন্ন রঙে প্রবর্তন করার কথা জানিয়েছেন বাস মালিক সমিতির নেতারা।
সুত্রঃ বণিক বার্তা
এম এইচ/
Discussion about this post