সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মধ্যস্থতায় ইউক্রেন এবং রাশিয়া প্রায় পাঁচশো যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। কিয়েভের কর্মকর্তারা এটিকে যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেন বলেছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ ২৩০ জন ইউক্রেনীয় বন্দিকে রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে মুক্ত করা হয়েছে। বিনিময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ২৪৮ রাশিয়ানকে মুক্তি দেয়। গত আগস্টের পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এটিই প্রথম বড় কোনও বন্দি বিনিময়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আমাদের লোকেরা বাড়িতে রয়েছে। আজ আমরা রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে ২০০ জনেরও বেশি যোদ্ধা এবং বেসামরিক নাগরিককে ফিরিয়ে এনেছি।’ এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বন্দি বিনিময়ের এই আলোচনা ‘কঠিন’ ছিল। বিবিসি বলছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে উভয় দেশ বেশ কয়েক দফায় বন্দি বিনিময় করেছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট গত মাসে বলেছিলেন, রাশিয়ার নিজস্ব ‘খুব নির্দিষ্ট কারণে’ এই প্রক্রিয়াটি ধীর হয়ে গেছে।
এদিকে বন্দিদের মুক্তির বেশ কিছু ছবি রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা আলাদাভাবে পোস্ট করেছেন। মস্কোর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজন রাশিয়ান বাসে হাসছেন। ইউক্রেন বলেছে, তাদের মুক্ত করা সৈন্যদের মধ্যে কৃষ্ণসাগরের পাথুরে দ্বীপ স্নেক আইল্যান্ডের সাতজন যোদ্ধাও রয়েছে।
স্নেক আইল্যান্ড রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। মূলত সেখানে অবস্থানরত একজন সীমান্তরক্ষী রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ মোসভকার কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করে। এরপরই তাদের বীরত্বের কথা ছড়িয়ে পড়ে। মুক্তিপ্রাপ্ত অন্যদের মধ্যে চেরনোবিল অঞ্চলে বন্দি হওয়া ন্যাশনাল গার্ডসের সদস্য এবং মারিউপোলের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টের যুদ্ধের সময় আটক সৈন্যরাও রয়েছেন। কিয়েভের মতে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক।
উভয় পক্ষই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। গত মাসে ইউক্রেন জানায়, তারা ৪৮ দফায় বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়ায় রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে প্রায় ২ হাজার ৫৯৮ জনকে মুক্ত করেছে। রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়া কিছু ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দি বলেছেন, তারা মারধর এবং বৈদ্যুতিক শকসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
এ জেড কে/
Discussion about this post