মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতি ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক ঘুমও ইবাদত-পুণ্যে পরিণত হয়। ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো রাত। কেননা আল্লাহ তা’আলা রাতকে বিশ্রামের উপযোগী করেই বানিয়েছেন।
রাসুল (সা.) এশার নামাজের পর গল্পগুজব ও গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তাগিদ দিতেন (মুসনাদ আবি ইয়ালা, হাদিস : ৪৮৭৯)।
মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য (সুরা : নাবা, আয়াত : ৯-১১)।’
আমাদের প্রিয় নবি (সা.) রাতে দেরি করে ঘুমানো অপছন্দ করতেন। সাহাবায়ে কিরামকে তাগিদ দিতেন এশার পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার। রাসুল (সা.) এশার নামাজ এক-তৃতীয়াংশ রাত পরিমাণ দেরি করে পড়া পছন্দ করতেন, আর এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৯)।
নির্জন বাড়ি-ঘরে ঘুম :
অনেক সময় বাড়ি-ঘর নিস্তব্ধ ও নির্জনতায় ছেয়ে থাকে। এসব ঘরে একাকী ঘুমানো উচিত নয়। তাই জনশূন্য ঘরে ঘুমানোর ক্ষেত্রে হাদিসের নিষেধাজ্ঞা রায়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘রাসুল (সা.) কোনো ঘরে নির্জন রাত যাপন ও একাকী সফর করতে নিষেধ করেছেন (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৫৬৫০)
খোলা আকাশের নিচে
ঘরের বাইরে ও আকাশের নিচে ঘুমাতে মহানবি (সা.) নিষেধ করেছেন। অনুরূপ ছাদেও ঘুমানো উচিত নয়। হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কেউ যদি রাতে বেষ্টনীবিহীন ছাদে ঘুমায়, তাহলে (কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে) তার ব্যাপারে (আল্লাহর) কোনো দায়িত্ব নেই (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৪১)।’
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা রাতে পানাহারের পাত্রগুলো ঢেকে রেখো। ঘরের দরজাগুলো বন্ধ রেখো। আর সন্ধ্যাবেলা বাচ্চাদের ঘরের ভেতর রেখো, কারণ এ সময় জিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোনো কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। ঘুম যাওয়ার সময় বাতিগুলো নিভিয়ে দাও। কেননা, অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্বালিত সলতেযুক্ত প্রতীপ-বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং সব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩১৬)
টিবি
Discussion about this post