রোমানিয়া সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাঙ্গেরিতে ঢোকার চেষ্টারত বাংলাদেশিসহ ১০৭ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর অর্থাৎ এই চার দিনে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় এইসব অভিবাসীদের আটক করে রোমানিয়ার সীমান্ত পুলিশ। এসব অভিবাসীরা বাংলাদেশ, সিরিয়া, মিশর, ইরাক, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানিয়েছে তারা।
রোমানিয়ায় আসা নিয়মিত ও অনিয়মিত অভিবাসীরা পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাঙ্গেরিতে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ কারণে সবগুলো সীমান্তে কড়া নজরদারি রেখেছে ইউরোপের অবাধ চলাচলের অঞ্চল শেঙেন জোনে প্রবেশে ইচ্ছুক দেশটি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত বেশ কয়েকটি অভিযানে বিভিন্ন দেশের ১০৭ জন অভিবাসীর হাঙ্গেরিতে বেআইনি প্রবেশ ঠেকিয়ে দেয়ার তথ্য দিয়েছে রোমানিয়া বর্ডার পুলিশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম অভিযানটি পরিচালিত হয় ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টায়৷ ওই দিন নাদলাক সীমান্তে আসা একটি মিনিবাস থেকে বাংলাদেশ ও সিরিয়ার ২০ জন নাগরিককে শনাক্ত করে সীমান্ত পুলিশ ও শুল্ক কর্মকর্তারা। গাড়ির চালক একজন রোমানীয় নাগরিক।
একই দিন রাত ১০টায় দ্বিতীয় অভিযানে আরাদ অঞ্চলের নাদলাক-২ সীমান্ত পয়েন্টে আসা রোমানিয়ায় নিবন্ধিত একটি ভ্যান থেকে বাংলাদেশ ও মিশরের ২০ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়৷ তাদের সবাই বৈধ ভিসা নিয়ে রোমানিয়ায় এসেছিলেন। গাড়ির চালক ইটালির একটি ট্রেডিং কোম্পানির জন্য রেফ্রিজারেটেড ক্রেট পরিবহণের তথ্য দিয়েছিলেন।
১৮ ডিসেম্বর অপর অভিযান দুটি পরিচালিত হয়৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দফায় নাদলাক-২ এবং টার্নু বর্ডার পুলিশ সেক্টরের সীমান্ত রক্ষীরা মোট ৬৭ জন বিদেশি নাগরিককে শনাক্ত করেছে।
সোমবার সকালে প্রথম দফায় একজন তুর্কি নাগরিক তুরস্কে নিবন্ধিত একটি গাড়ি নিয়ে সীমান্তে আসেন৷ তিনি তুরস্ক-পোল্যান্ড রুটে একটি গাড়ি পরিবহণ করছিলেন। গাড়িটিতে তল্লাশি চালানো হলে কার্গো বগিতে লুকিয়ে থাকা ৪৫ জন বিদেশি নাগরিককে পাওয়া যায়৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ নিশ্চিত হয়, অভিবাসীরা সিরিয়া, তুরস্ক এবং ইরাক থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থী।
একই সেক্টরের টার্নু বর্ডার পুলিশের টহলের সময় সীমান্ত লাইন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে হাঁটতে থাকা ২২ জন ব্যক্তিকে দেখতে পায়। তারা সেখানে কী করছিলেন তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে না পারায়, নথি যাচাই বাছাইয়ের জন্য স্থানীয় পুলিশের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তের পর প্রমাণিত হয়, তারা শ্রীলঙ্কান ও পাকিস্তানি নাগরিক৷ তারা নিয়মিত পথে রোমানিয়ায় আসলেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাঙ্গেরিতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
এসব অভিযান আটক চালকদের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ আনা হবে। এছাড়া সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টারত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে তাদের নিজ নিজ দেশের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এমএইউ/টিএম (রোমানিয়া সীমান্ত পুলিশ)
Discussion about this post