মেঘনা নদীতে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে ২ লাখ মানুষ।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) মধ্যরাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্নস্থানে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে।
একই সঙ্গে ধমকা ও ঝড়ো হওয়া বইছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপকূলীয় ঘরবাড়িতে রাতেও পানি উঠার আশঙ্কায় কিছু বাসিন্দা উঁচুস্থানে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার নদীর তীরবর্তী ৪০টি গ্রামের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ জনপদে পানি ঢুকে পড়ে।
সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হলেও দুপুর থেকে লোকালয়ে পানি উঠতে শুরু করে। যদিও সন্ধ্যায় জোয়ারের পানি নেমে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদরের চর রমণী মোহন, রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী, কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, পাটারীরহাট, চরকালকিনি, সাহেবেরহাট, চরফলকন, রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চররমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকেছে।
এতে বাড়িঘর, ফসলিক্ষেত, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনপদ হাঁটুসমান পানি ছিল।
চরমার্টিনের কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, নদীর তীরবর্তী বাঁধ না থাকায় সহজে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। তীররক্ষা কাজ চলমান থাকলেও বাঁধ এখনো নির্মাণ হয়নি।
কমলগরের নাছিরগঞ্জের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, নদী থেকে আমাদের বাড়ি খুব কাছে। জোয়ারের পানি দ্রুত বাড়িতে ঢুকে যায়।
বাঁধের কাজ এখনো হয়নি। কাজ দ্রুত শেষ না হলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানির কবলে পড়ব।
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা সালেহা বেগম বলেন, ঘরে হাঁটু পানি। খুব কষ্টে আছি, বুঝাতে পারব না। বুধবারও পানি ছিল।
নবীগঞ্জ এলাকার জেলে জামাল মাঝি বলেন, আমাদের বাড়ি নদী অনেক দূরে ছিল। ভাঙতে-ভাঙতে এখন কাছে চলে আসছে। ৮-১০ বছর ধরেই জোয়ারের পানি আমাদেরকে ভোগাচ্ছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত উজ জামান বলেন, আমি মাতব্বরহাট, পাটারিরহাট, ফলকন, চরমার্টিন, চর লরেন্স, তোরাবগঞ্জ, কালকিনি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বেশ কিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান জানায়, লক্ষ্মীপুরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি ছিল। নদী উত্তাল থাকলেও এখন ভাটা পড়ে স্বাভাবিক হয়েছে।
এস এইচ/
Discussion about this post