লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনের জানালা ভাঙচুরে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। সোমবার (২৭ এপ্রিল) পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর ইকোনমিক টাইমসের।
এর আগে রোববার ৪১ বছর বয়সী অঙ্কিত লাভ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ বলছে, রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে লন্ডনের কিংস্টন অ্যান্ড চেলসিয়া এলাকার লওন্ডেস স্কয়্যারে অবস্থিত পাকিস্তানি হাইকমিশনের একাধিক জানালা ভাঙচুর করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই হামলা চালিয়েছিলেন অঙ্কিত এবং তিনি একাই ছিলেন।
৪১ বছর বয়সী অঙ্কিত লাভের জন্ম ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যে। ২০১৫ সালে তিনি নিজেকে জম্মু ও কাশ্মিরের ডোগরা রাজবংশের উত্তরাধিকারী এবং জম্মু-কাশ্মির ন্যাশনাল প্যান্থার্স পার্টির সাবেক প্রেসিডেন্ট ভীম সিং-এর পুত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। জম্মু-কাশ্মির ন্যাশনাল প্যান্থার্স পার্টি মূলত একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও বামঘেঁষা রাজনৈতিক দল।
২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। সেজন্য ‘ওয়ান লাভ পার্টি’ নামের একটি রাজনৈতিক দলও গঠন করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে তিনি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন এবং তার সেই রাজনৈতিক দলটিও বর্তমানে অস্তিত্বহীন।
কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে। এই উত্তেজনার আবহে গত শুক্রবার লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনের বাইরে প্রবাসী ভারতীয় ও পাকিস্তানিরা মুখোমুখি বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
ভারতীয় কমিউনিটি সংগঠনগুলো সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের মদদের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানায়। প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানি প্রবাসীরা পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করলে হাইকমিশনের সামনে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘাত বেঁধে যায়।
শুক্রবার ওই সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তান হাইকমিশন ভবনের বারান্দা থেকে এক পাকিস্তানি কূটনীতিকের অঙ্গভঙ্গি ভালোভাবে নেয়নি বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনার জেরে রোববার লন্ডনে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যেই ঘটে ভাঙচুরের ঘটনা।
মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রোববার ভোরবেলায় পাকিস্তান হাইকমিশনে ভাঙচুরের খবর পায় পুলিশ। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অভিযুক্ত অঙ্কিত লাভের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার তাকে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করার জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়।
Discussion about this post