ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ কমছে না। সচেতন থাকা ছাড়া ভালো কোনো বিকল্প নেই। আবার সময়টা ঘোরাঘুরির জন্যও দারুণ। পার্বত্য অঞ্চলের মশার কামড়ে আছে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি। শহর, গ্রাম, পাহাড়, সমুদ্র—যেখানেই থাকুন না কেন, সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে সচেতন থাকতেই হবে। তবে মশা কাদের বেশি কামড়ায়, মানবদেহের কোন অংশে কামড়াতে বেশি ‘পছন্দ’ করে, এসব নিয়েও কিছু গবেষণা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক এসব গবেষণার বিষয়গুলো সহজভাবে ব্যাখ্যা করলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
মশা কাদের বেশি কামড়ায়?
কোনো কোনো গবেষণা বলছে, রক্তের গ্রুপ ‘ও’ হলে মশার কামড় খাওয়ার ঝুঁকি বেশি। তা সেটা ‘ও পজিটিভ’ বা ‘ও নেগেটিভ’ যেটিই হোক। অন্যান্য গবেষণার ফলাফল কিন্তু আবার অন্য রকম। তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? সীমিত পরিসরে হওয়া এসব গবেষণার কোনোটিকেই ধ্রুব সত্য হিসেবে মেনে নেওয়ার উপায় নেই। কারণ, সুযোগ পেলে মশা যে কাউকেই কামড়ে দেবে।
কিছু গবেষণায় এমনও দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত মোজা বদলান না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে খুব একটা সচেতন থাকেন না, মশা তাঁদের বেশি কামড়ায়। আবার যাঁরা নিয়মিত সাবান, ময়েশ্চারাইজার, ডিওডরেন্ট বা অন্য কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করেন ত্বকের কোনো অংশে, তাঁদের ত্বকের সেই অংশে মশা কম কামড়ায়। কিন্তু এমন বহু উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যায় যে একেবারে ঝকঝকে একটা ঘরেও মশা কামড়ে দেয় ছোট্ট কোনো শিশুকে; যে শিশুকে তাঁর মা নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করিয়ে ময়েশ্চারাইজার মাখিয়ে পরিপাটি করে রাখেন। কাজেই এসব গবেষণার কোনোটিই প্রমাণ করে না যে এ ধরনের কোনো বিষয় আপনাকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত রাখবে।
শরীরের কোন অংশে মশা বেশি কামড়ায়?
গবেষণা বলছে, দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় থাকলে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা মাথা ও ঘাড়ের কাছাকাছি অংশে কামড়ানোর চেষ্টা বেশি করে; আর ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস মশা বেশি কামড়ায় পায়ে। কিন্তু যখন কেউ শুয়ে থাকবেন, তখন যেকোনো মশাই তাঁর শরীরের যেকোনো অংশে কামড়ানোর চেষ্টা করে। আবার এমনও দেখা যায় যে বগলের চেয়ে হাত বা পায়ে বেশি কামড়ায় মশা। এসব গবেষণাও হয়েছে অল্পসংখ্যক মানুষের ওপর। এসবও আদতে এমন কোনো বিষয় নয়, যা মশার আচরণগত কোনো বৈশিষ্ট্য হিসেবে স্বীকৃত।
থাকতে হবে সচেতন
মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে সচেতন থাকতেই হবে। দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করুন অবশ্যই। পড়ালেখা, কাজকর্ম কিংবা অবসরযাপনের সময় ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরুন। পোশাকে মসকিউটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করতে পারেন নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে, সতর্কতার সঙ্গে। পরিবেশের পরিচ্ছন্নতাও বজায় রাখুন।
সূত্র: প্রথম আলো
এস এইচ/
Discussion about this post