বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ফেনীর মহিপালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুম (২৫) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করে মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ফেনী মডেল থানায় নিহত মাসুমের ভাই মো. মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
নিহত মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া এলাকার নোমান হাসানের ছেলে। তিনি ছাগলনাইয়া আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফলপ্রার্থী ছিল।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করতে প্ররোচনা, উসকানি ও নির্দেশনার অভিযোগে তাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মোস্তফা, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু, জিয়া উদ্দিন বাবলু, আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী পাপ্পু প্রমুখ। এর আগে, এ ঘটনায় ছয়টি মামলায় জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের গুলিবর্ষণ করে। এসময় ছাগলনাইয়ার আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মাহবুবুল আলম মাসুমের মাথা, বুকে ও পিঠে গুলি লাগে। পরে তাকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
Discussion about this post